আব্দুল আওয়ালঃ নেত্রকোনা মদন পৌর এলাকার বেশিরভাগ রাস্তা ভাঙ্গা হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে মিনি পুকুরে পরিণত হয়েছে। টেন্ডার হলেও কাজ শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে এ সকল রাস্তায় যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেও চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে। আর এ বেহাল দশার কারণে পৌর নাগরিকদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০০ সালে মদন পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার ১৯ বছর পেরিয়ে গেলেও পৌর নাগরিকরা পৌরসভার কাছ থেকে কাঙ্খিত নাগরিক সেবা পাচ্ছেন না। মদন পৌরসভা তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভা থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির পৌরসভায় উন্নিত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার অভাবে মদন পৌরসভা আজো পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে উঠছে না।
১৯ বছরে পৌর এলাকায় জনসংখ্যা ও যানবাহন বহুগুণ বৃদ্ধি পেলেও সেই তুলনায় রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়নি। আগে থেকেই যে সকল রাস্তাঘাট সেগুলোও নিয়মিত সংস্কার কিংবা মেরামত না করায় ক্রমান্বয়ে পিচ, পাথর ও সুড়কি উঠে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে ভঙ্গুর দশা দেখা দিয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় রাস্তা সংস্কার না করায় ছোট বড় অসংখ্য খানা খন্দের সৃষ্টি হয়ে মিনি পুকুরে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে পৌর কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিত ড্রেন পরিষ্কার না থাকায় পানি জমে এ সবের সৃৃষ্টি হয়েছে বলে একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
মদন পৌরসভার প্রধান (মদন-খালিয়াজুরী ) সড়কটি বিশেষ করে মদন নতুন বাস স্ট্যান্ড থেকে পুরাতন থানা মোড় সড়ক ও জনপথ বিভাগের হলেও তাদের উদাসিনতায় সড়কের অবস্থা একবারে নাজুক। সড়কের বেশ কয়েকটি অংশ থেকেই পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে মিনি পুকুরে পরিণত হয়েছে। বর্ষায় পানি জমে সড়কের অবস্থা আরো করুণ আকার ধারণ করেছে।
এছাড়া পৌর সদরের দেওয়ান বাজারের রাস্তা, দেওয়ান বাজার থেকে মনোহরপুর এলজিডির রোডসহ বেশিরভাগ এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থার কারণে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। ভুক্তভোগী লোকজন এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকির অভাব ও অত্যন্ত নিন্মমানের কাজকেই দায়ী করেছেন।
এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মদন পৌরসভা নামেই মাত্র পৌরসভা, রাস্তা ঘাটের যে বেহাল অবস্থা তা দেখার কেউ নেই। মানুষ এখন গাড়ি নিয়ে যাবে দূরের কথা,হেটেও চলা ফেরা করতে পারছে না। রাস্তা গুলো এখন ছোট পুকুর হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। রাস্তা গুলো দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছেন তারা।
পৌর মেয়র আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীম জানান, মূল রাস্তা হচ্ছে নির্বাহী প্রকৌশলী বিভাগের, বাকি রাস্তা হচ্ছে এলজিডির। আমি নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি। রাস্তাটি টেন্ডার হয়েছে। অচিরেই কাজ শুরু করবে।
উপজেলা প্রকৌশলী আমিনূল ইসলাম মৃধা জানান, এলজিডির পৌর সভায় কোন রাস্তা পড়েছে তা তিনি জানেন না। খোঁজ নিয়ে অচিরেই রাস্তা গুলোর সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ওয়ালীউল হাসান জানান, আমি নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি। টেন্ডার হয়েছে দ্রুত কাজ শুরু করবে।
নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হামিদুল ইসলাম জানান, একই ঠিকাদার দুটি কাজ পেয়েছেন। একটির কাজ প্রায় শেষের দিকে। দিনের অবস্থাও ভাল না। ঠিকাদারকে বলেছি মদনের কাজটি দ্রুত শুরু করেন। এ বিষয়ে মদনের ইউএনও ও মেয়রের সাথে কথা বলেছি।