খবর৭১ঃ ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গে ঘরে বসে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। আর এই দুঃসময়ে দরিদ্র প্রতিবেশি, গ্রামবাসী বা এলাকাবাসীর কথা ভুলে না যেতে সামর্থ্যবানদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে আসা সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে রবিবার সন্ধ্যায় দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশের জনগণসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদ মোবারক।’
বক্তব্যের শুরুতে শেখ হাসিনা গভীর শ্রদ্ধাভরে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। শ্রদ্ধা জানান জাতীয় চার নেতার প্রতি। মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকেও স্মরণ করেন সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি স্মরণ করছি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কাল রাতে ঘাতকদের হাতে নিহত আমার মা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন ভাই- মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল ও দশ বছরের ছোট্ট শেখ রাসেলকে, কামাল ও জামালের নবপরিণীতা বধু সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসেরসহ সকল শহিদকে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদুল ফিতর মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব হলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে সকল ধর্ম এবং বর্ণের মানুষ এ উৎসবে সমানভাবে সামিল হয়ে থাকেন। ঈদের আনন্দ সকলে ভাগাভাগি করে উপভোগ করেন।’
‘কিন্তু এবছর এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। করোনা নামক এক প্রাণঘাতী ভাইরাস সারা বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। তার ওপর ঘূর্ণিঝড় আমপানের তাণ্ডবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে সব ধরনের অফিস-আদালত ও গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। এই সময়ে সবাইকে বাসায় থাকার, জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে ন্যূনতম শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মসজিদে জামাতে নামাজ পড়ার ওপর দেওয়া কড়াকড়ি সম্প্রতি তুলে নেওয়া হলেও ঈদের দিন ঈদগাহ বা খোলা জায়গার বদলে বাড়ির কাছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে বলেছে সরকার।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সকল ধরনের গণ-জমায়েতের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাজেই স্বাভাবিক সময়ের মতো এবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করা সম্ভব হবে না। ঈদগাহ ময়দানের পরিবর্তে মসজিদে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
ইতোঃপূর্বে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠান, স্বাধীনতা দিবস এবং বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানও জনসমাগম এড়িয়ে রেডিও, টেলিভিশন এবং ডিজিটাল মাধ্যমে উদযাপন করা হয়েছে বলেও জানান সরকারপ্রধান।