ছাতকে করোনা যুদ্ধে ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা ডাক্তারদের কার্যক্রম প্রশংশিত

0
504
ছাতকে নৈশ প্রহরীকে হত্যা করে রেলওয়ে গুদামের মালামাল লুট

হাবিবুর রহমান নাসির ছাতকঃ
বর্তমান বৈশ্বিক মহামারি করোনার ভাইরাসকে প্রতিহত বা পরাস্থ করার ব্রত নিয়ে সম্মূখ যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছেন ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও ডাক্তাররা ফ্রন্টটলাইন যোদ্ধা হিসেবে করোনা মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারী নির্দেশনার পাশাপাশি পেশাগত নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকেই এ দেশের গর্বিত ডাক্তাররা মৃত্যুর মুখোমুখী দাঁড়িয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ডাক্তারদের এ মহান মানবিক দায়িত্ববোধকে উৎসাহ দিতে দেশের এক অত্যন্ত জনপ্রিয় চ্যানেল এটিএন নিউজ ইতিমধ্যেই ‘থ্যাংকইউ ডাক্তার’ নামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান প্রতিদিন প্রচার করছে। সারা দেশের ন্যায় ছাতকেও ডাক্তাররা তাদের কার্যক্রমে প্রসংসার দাবী রাখেন। স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক এখানে টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চলছে নিয়মিত কার্যক্রম। সংক্রমিত রোগ দের হসপিটালাইটিস ও হোম কায়ারেনটাইন নিশ্চিতকরনসহ প্রতিদিনই চলছে টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহের কাজ। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক, ছাতকের উত্তর খুরমা ইউনিয়নের নাদামপুর গ্রামের বাসিন্দা ডাঃ মঈনউদ্দিন আহমদ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুবরন করার বিষয়টি এখানের ডাক্তাদের হৃদয়ে একটি বড় ধরনের ধাক্কা লাগলেও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ যুদ্ধে দৃঢ় মনোবল নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ ও প. প. কর্মকর্তা রাজীব চক্রবর্ত্তীর নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছেন ডাক্তাররা। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের বিরামহীন ও দক্ষ কার্যক্রমে জেলার অন্যান্য উপজেলার চেয়ে ছাতক উপজেলার অবস্থা অনেকটাই ভালো বলে অনেকেই মনে করছেন। অভিজ্ঞ মহলের মতে বর্তমান পরিস্থিতি ধরে রাখতে অব্যাহত মেডিকেল কার্যক্রমের পাশাপাশি সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা টিম ওয়ারী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। ছাতক ও কৈতক হাসপাতালের ১৪ জন ডাক্তার ও স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়ে গঠিত ৩টি টিম করোনা সংক্রমক প্রতিরোধে রোটিন মাফিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সদ্য আগত প্রবাসী ও ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, নরসিন্দী এবং গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছাতকে প্রবেশ করা মানুষদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে গ্রামে-গ্রামে ছুটে যেতে হচ্ছে ডাক্তাদের। নমুনা সংগ্রহের মতো ঝুকিপূর্ন কাজটি দক্ষতা করে যাচ্ছেন এখানের স্বাস্থ্য বিভাগ। এসব কাজে নিয়োজিত ডাক্তাররা অন্তত ১০দিন হোমকোয়ারেন্টাইন ম্যান্টেইন করে আবারো কর্মে ফিরতে হচ্ছে। এ ছাড়া হোমকোয়ারেন্টাইনে রাখা ব্যক্তিদের খাবার সরবরাহসহ স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টিও দেখতে হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগকে। এসব কাজে স্বাস্থ্য বিভাগকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা রাজীব চক্রবর্ত্তী জানান, মাননীয় এমপি মুহিবুর রহমান মানিক মহোদ্বয়ের পরামর্শ ও নির্দেশনায় করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। বর্তমানে ছাতক উপজেলার পরিস্থিতিতে ভালো বলা না গেলেও মন্দের ভালো বলা যায়। তার সহকর্মীরা বিরতী দিয়ে টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে করোনা মহামারি মেকাবেলার চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৪৬ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৫ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেছে। করোনা আক্রান্ত ১ জনকে সিলেট সামছুদ্দিন হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। বাকী ৪ জনকে নিজ ঘরে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এসব করোনা রোগীর অবস্থা ক্রম উন্নতির দিকে যাচ্ছে বলা যেতে পারে।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতি মধ্যেই ছাতক সরকারী ডিগ্রি কলেজকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ছাতক হাসপাতালের নতুন ভবনে ১২টি বেড দিয়ে একটি আইসোলেশন ইউনিট চালু করা হয়েছে। ৫ এপ্রিল মাননীয় এমপি মুহিবুর রহমান মানিক মহোদ্বয় আইসোলেশন ইউনিট পরিদর্শন করেছেন। এসময় ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য তিনি তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে ছাতক ও কৈতক হাসপাতালসহ উপজেলার ৩০ কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত ডাক্তার ও কমিউনিটি হেলথ প্রোবাইডারদের জন্য ৪০টি পিপিই, ৩৬০টি সার্জিকেল মাস্ক, ১৭৫টি ক্যাপ, ৫৮ জোড়া গøাপস, ২৪৮ টি সেভলন সোপ, ৬৮টি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ১৪৪টি টিস্যু বক্স ও ৪০টি বালতি-মগ তার হাতে হস্থান্তর করেন। করোনা যুদ্ধে ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধা হিসেবে ডাক্তাদের সর্বাত্ম সহযোগিতা করার আহবান জানান তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here