খবর৭১ঃ বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসে দেশে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো তিনজনে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ছয়জন। সবমিলিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ জন।
সোমবার বিকালে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এই এসব তথ্য জানান।
আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, ‘আমরা গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করিয়েছি। সর্বমোট ৬২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই মুহূর্তে আইসোলেশনে আছেন করোনা নিশ্চিত এবং সন্দেহজনকভাবে যাদের মধ্যে মনে করা হচ্ছে যে, করোনার উপস্থিতি থাকতে পারে অথবা যাদের মধ্যে লক্ষণ উপসর্গ রয়েছে এমন ৫১ জন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৬ জন। নমুনা পরীক্ষায় করোনা আছে এমন সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ছয়জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত করেছি। এই ছয়জনের মধ্যে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন। অর্থাৎ মোট মৃত্যুর সংখ্যা তিনজন এবং পাঁচজন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। এদের মধ্যে আগেই তিনজন সুস্থ হয়েছিলেন, নতুন আরও দুজন গতকাল বাড়ি গেছেন।’
ডা. ফ্লোরা বলেন, ‘নতুন যে ছয়জন আক্রান্ত হয়েছেন, এদের তিনজন পুরুষ ও তিনজন নারী। তাদের বয়ন ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩০ থেকে ৪০ এর মধ্যে দুজন, ৪০ থেকে ৫০ এর মধ্যে একজন, ষাটোর্ধ দুজন, এরমধ্যে একজনের বয়স ৭০ বছরের উপরে। এদের দুজন দেশের বাইরে থেকে এসেছেন, ভারত ও বাহরাইন থেকে। এদের দুজনের মধ্যে অন্য দীর্ঘমেয়াদী রোগ ছিল।’
ফ্লোরা জানান, এই ছয়জনের মধ্যে একজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। এ পর্যন্ত একজন চিকিৎসক ও দুজন নার্সসহ মোট তিনজন স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
আইইডিসিআর পরিচালক জানান, ৩৩ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ পুরুষ এবং এক তৃতীয়াংশ নারী। ১০ বছর বয়সের নিচে আছে দুজন, ১০ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে একজন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে নয়জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে নয়জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে পাঁচজন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে একজন এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ছয়জন।
জেলাভিত্তিক আক্রান্তদের বিশ্লেষণে তিনি জানান, করোনা আক্রান্ত ৩৩ জনের মধ্যে ঢাকায় ১৫ জন, মাদারীপুরে ১০ জন, নারায়ণগঞ্জে তিনজন, গাইবান্ধায় দুজন, কুমিল্লায় একজন, গাজীপুরে একজন এবং চুয়াডাঙ্গায় একজন।
তিনি বলেন, সংক্রমণ পাওয়া গেছে এমন ৩৩ জনের মধ্যে ১৩ জন অন্য দেশ ভ্রমণ করে এসেছেন, বাকি ২০ জনই এদের মাধ্যমে কোনো না কোনোভাবে সংক্রমিত হয়েছেন। ১৩ জনের মধ্যে ইতালি থেকে ছয়জন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুজন, ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে দুজন, বাহরাইন থেকে একজন, ভারত থেকে একজন এবং কুয়েত থেকে একজন। অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী রোগ রয়েছে ১১ জনের মধ্যে। এদের মধ্যে বেশিরভাগের অবস্থা এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল। কিডনি সমস্যা রয়েছে যে রোগীর তার এখনো ডায়ালাসিসের প্রয়োজন হচ্ছে। বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল।