খবর৭১ঃ করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করতে সতর্কতা হিসেবে বিদেশিদের জন্য ওমরাহ করার সুবিধা স্থগিত করেছে সৌদি আরব সরকার। এতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওমরাহ করার উদ্দেশ্যে যারা বিমানবন্দরে গেছেন তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার কোন ফ্লাইট ওমরাহ ও সৌদি ভিজিট ভিসাপ্রাপ্ত যাত্রীদের নেয়নি। কয়েকটি এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, তারা সকালেই সৌদি সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সকল এয়ারলাইন্সের জন্য জারি করা নির্দেশনাটি পেয়েছেন।
এরপর থেকে তারা ফোন করে যাত্রীদের জানানো শুরু করেছেন। পরবর্তী নোটিশ না আসা পর্যন্ত ওমরাহ ও ভিজিট ভিসাপ্রাপ্ত যাত্রীদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।
ঢাকার বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্সের এজেন্টদের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, কিছু এয়ারলাইন্স যাত্রীদের বিমানে উঠিয়েও পরে তাদের নামিয়ে নিয়েছে।
আর অনেক এয়ারলাইন্স চেক ইন করছে না বা বোর্ডিং কার্ড দিচ্ছে না। হজ এজেন্সি এসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি সাহাদাৎ হোসেন তসলিম জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আজ সকাল থেকে ওমরাহ করার উদ্দেশ্যে বিমানবন্দরে যারা গেছেন তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। সৌদি আরবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করতে সতর্কতা হিসেবে বিদেশিদের জন্য ওমরাহ করার সুবিধা স্থগিত করার পর সমস্যা শুরু হয়েছে।
তিনি বলছেন, বাংলাদেশের যে তিনটি বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক বিমান যাতায়াত করে, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট সবগুলো বিমানবন্দরে প্রায় এক হাজারের মতো সৌদিগামী যাত্রী আটকে পড়েছেন। ঢাকাতেই এই সংখ্যা ৫০০ মতো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
তবে অনেকেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।সাহাদাৎ হোসেন তসলিম বলেছেন, “এই মুহূর্তে ১০ হাজার লোকের ওমরাহ ভিসা করা আছে আর তাদের অর্ধেকেরই টিকেট করা হয়ে গেছে। এখন তাদের যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পরেছে। ”
তিনি আরও বলেছেন, “ওমরাহ ভিসা সাধারণত ১৫ দিনের জন্য দেয়া হয়ে থাকে। ভিসা করার সময়ই হোটেল বুকিং দেখাতে হয়। এখন সৌদি সরকার কবে এই স্থগিতাদেশ তুলে নেবে তা নিশ্চিত নয় বলে ওই দশ হাজার ব্যক্তি যেতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। ”
এবারের হজের উপর কোন প্রভাব পড়বে কিনা তা এখনো পরিষ্কার নয়। ঢাকার বাসিন্দা সুমাইয়া খান আশা পরিবারের আটজনসহ ওমরাহ করতে যাওয়ার জন্য সবকিছু ঠিকঠাক করে ফেলেছিলেন।
তিনি বলছেন, “আমাদের টিকেট ও হোটেল কনফার্ম ছিল। অর্ধেকের মতো টাকা দেয়া হয়ে গেছে। মার্চের ১১ তারিখ যাওয়ার কথা ছিল। এখন বাসা থেকে এয়ারলাইন্স অফিসে গেছে খবর নিতে। আজ সকালটা শুরুই হয়েছে এই খবর দিয়ে। ওমরাহ করতে যাবো বলে ছুটিও নেয়া হয়েছে। এখন সবচেয়ে বেশি হতাশ আমার মা। ”
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি দিয়ে আজই বিদেশিদের জন্য ওমরাহ করার সুযোগ স্থগিত করেছে। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পরার আশংকায় এটি করা হয়েছে। যেহেতু সৌদি আরবের প্রতিবেশী অন্তত চারটি দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। একই সাথে ভিসা থাকা সত্ত্বেও করোনাভাইরাস ধরা পরেছে এমন এলাকা থেকে আসা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সৌদি আরবে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। তবে এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে দেশগুলির নাম উল্লেখ করা হয়নি। মক্কায় ওমরাহ বন্ধ করার পাশাপাশি মদিনায়ও প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে।