খবর৭১ঃ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, নতুন করোনাভাইরাস সারা বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যে ৩০টি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। চীনে আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে এ রোগ ছাড়িয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে এ পর্যন্ত ৩ লাখের বেশি মানুষকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। কারো শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। নতুন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পূর্ণ প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
চীনা দূতাবাস কর্তৃক করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ট্রিটমেন্ট প্রটোকল ও করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ৫০০ কিটস হস্তান্তর উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর, চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস সন্দেহে এ পর্যন্ত ৭৯ ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা হয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত একজনও করোনা সংক্রমিত রোগী পাওয়া যায়নি। ভবিষ্যতে করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোনো রোগী দেশে প্রবেশ করলে বা একাধিক রোগী আক্রান্ত হলে তাদের চিকিৎসায় কুয়েত মৈত্রি হাসপাতালটি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া রোগ নির্ণয়ের জন্য আইইডিসিআর-এর কাছে দুই হাজার কিটস রয়েছে। আজ চীন থেকে আরও ৫০০ কিটস উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাইপলাইনে আরও কিটস আছে, প্রয়োজন হলে আনা যাবে।
এ সময় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ৫শ’ কিটস চীন সরকারের শুভেচ্ছাস্বরূপ আমরা দিচ্ছি। যা ব্যবহার অত্যন্ত সহজসাধ্য। এ ছাড়া নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কিত চীন সরকার প্রণীত চিকিৎসা প্রটোকল দিচ্ছি। যেখানে এই রোগের চিকিৎসা ও ডায়াগনস্টিক সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা রয়েছে।
চীনে অবস্থিত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা ভালো আছে। তাদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের সামগ্রিক প্রয়োজন মেটানোর প্রতিশ্রুতি আমরা করেছি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরে উচ্চপর্যায়ের সভা:নতুন করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিভাগের করণীয় নির্ধারণে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্যসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা.এবিএম আবদুল্লাহ, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান, স্বাস্থ্যসেবা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ, আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ, আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক প্রফেসর ডা. বে-নজির আহমেদ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ডা. হাম্মাম এল সাক্কা, ইউএস সিডিসির স্থানীয় পরিচালক ডা. মাইকেল ফ্রিডম্যান, সেনা মেডিকেল সার্ভিসের উপ-পরিচালক ব্রিগেডিয়ার ডা. জুলফিকার।