খবর৭১ঃ
মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সম্পত্তি গ্রাস করার উদ্দেশ্যে হাজী উমর আলী নামে বৃদ্ধ পিতাকে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করেছে কুলাঙ্গার পুত্র। ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে।
মনির আহমেদ নামে আটক এক আসামীর বরাত দিয়ে লোমহর্ষক এ তথ্য দিয়েছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা।গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন-অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) শেখ মোহাম্মদ সেলিম ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আজমিরীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আবু হানিফসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ।সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন-হাজী উমর আলী দ্বিতীয় বিয়ের পর প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের কাছ থেকে আলাদা বসবাস করে আসছিলেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে নারী ও শিশু আইনে মামলা দায়ের করেন প্রথম স্ত্রী পিপি বেগম। বিষয়টি নিয়ে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে দূরত্ব তৈরী হয় উমর আলীর। এক পর্যায়ে পুরো সম্পত্তি এককভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে জন্মদাতা পিতাকে হত্যার পরিকল্পনা করে প্রথম পক্ষের সন্তান কাউছার আহমেদ। সে অনুযায়ী পিতাকে হত্যার জন্য সিলেট জেলার জকিগঞ্জ পৌর এলাকার দক্ষিণ দয়াগ্রামের এমাদ উদ্দিনের ছেলে ভাড়াটিয়ে কিলার মনির আহমেদের (৩০) সাথে ৫ হাজার টাকায় চুক্তি করে কাউছার। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মামলা আপোষের প্রলোভন দিয়ে উমর আলীকে সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার কালাইউড়াস্থ মনিরের শ্বশুর বাড়ির পাশের একটি টিলায় নিয়ে যায় কাউছার।
সেখানে তাকে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যার পর মাথা নদীতে ফেলে দেয়া হয়।শুধু তাই নয়, ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে গত ৬ জানুয়ারি আজমিরীগঞ্জ থানায় পিতার সন্ধান চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করে দূরন্ধর কাউছার। পরে গত ২১ জানুয়ারি হত্যার স্থল থেকে উমর আলীর কঙ্কাল উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ।এদিকে, গত ২৩ জানুয়ারি সন্দেহপ্রবণ হয়ে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত উমর আলীর ভাই মো. নায়েব আলী। মামলায় উমর আলীর ছেলে কাউছার আহমেদ (১৮), আল আমীন (২৫) ও তাদের মা পিপি বেগম (৫৫)সহ ৫ জনকে আসামী করা হয়।
মামলা দায়েরের পর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ নিশ্চিত হয় কাউছার ও মনির আহমেদ ওই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। পরে মনির ও তার শ্বাশুরি সুফিয়া খাতুনকে (৫৫) গ্রেফতার করে পুলিশ।সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়-কাউছারসহ হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যান্য আসামীরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।