সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ঢাবির অনাগ্রহ

0
474
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ঢাবির অনাগ্রহ

খবর৭১ঃ আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। কিন্তু এমন পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে অনাগ্রহ দেখিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল। আর ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাতন্ত্র্যতা ও স্বকীয়তা রক্ষার জন্য’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুও এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। উল্লেখ্য, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে ৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, অনুষদগুলোর ডিন ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা একটি সভা করেন।

সভায় অধিকাংশ শিক্ষকই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করার বিরোধিতা করেছেন। ওই দিন ডাকসুর নির্বাহী সভাতেও সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় না যাওয়ার পক্ষে রায় পাওয়া যায়। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাওয়ার ব্যাপারে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের কথা বলছেন।

সমন্বিত পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা ও স্বাতন্ত্র্যবোধ প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবে বলে মনে করেন তারা।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে আমাদের স্বায়ত্তশাসন দিয়েছেন। সেই আদেশবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কিছু পরিবর্তন করতে হলে তা একাডেমিক কাউন্সিলে পাস করেই করতে হবে। তবে তা অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। ’ তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন অনেক বৈচিত্র্য।

আগে বিভাগকেন্দ্রিক পরীক্ষা হতো, এখন হয় অনুষদভিত্তিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও অনেকগুলো ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা হয়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এগুলোর সমন্বয় করাও খুব সহজ বিষয় নয়। বিষয় বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জটিলতা বাড়বে বৈ কমবে না। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমসিকিউ ও লিখিত উভয় পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়। আর বিশ্বের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই স্বাতন্ত্র্যবোধ ও নিজস্ব নিয়ম-নীতি আছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ‘না’-বোধক মত দিয়েছে ডাকসুও। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে উপাচার্যের সভাপতিত্বে জাতীয় অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদদের নিয়ে যে বৈঠক হয়েছিল, সে সিদ্ধান্তের সঙ্গে ডাকসুও সম্মিলিতভাবে একমত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে এবং তিহাত্তরের অর্ডিন্যান্স বহাল রাখতে আমরা গুচ্ছ পরীক্ষায় না যাওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছি।

সমন্বিত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, একাডেমিক বিষয়গুলোতে সব সিদ্ধান্তই একাডেমিক কাউন্সিল নেয়। এ বিষয়েও একাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেবে। এ ব্যাপারে কাউন্সিলের সিদ্ধান্তই ‘চূড়ান্ত’ বলে তিনি জানান। একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক কবে হবে- এমন প্রশ্নে উপাচার্য বলেন, ‘এখন একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপনের আয়োজন করছি। শিগগিরই সেটি হবে। ’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here