খবর৭১ঃ পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে রাষ্ট্রায়ত্ত আরও চারটি ব্যাংককে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো শেয়ার ছাড়লে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বাজারে ফিরে আসবে বলেও আশা করছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা যেকোনো মূল্যে পুঁজিবাজার শক্তিশালী করতে চাই।’
রবিবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী একথা জানান। এই চারটি ব্যাংক হলো বিডিবিএল, অগ্রণী, জনতা ও সোনালী ব্যাংক।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এই চারটি ব্যাংককে বাজারে নিয়ে আসা হবে। একটি কমিটি করে দিয়েছি। কমিটিতে চারটি ব্যাংকের একজন করে থাকবেন। এটা আইসিবি কোঅর্ডিনেট করবে। তবে এর মধ্যে সোনালী ব্যাংক ট্রেজারি পারফর্ম করে। তাই আনতে সময় লাগবে। তবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্তত কাজটিই করতে চাই।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মূল অর্থনৈতিক এলাকায় কোথাও কোনো খারাপ সংকেত দিচ্ছে না। আমাদের একটি মাত্র খাত এখনো নেতিবাচক আছে। তবে একটি খাত দিয়ে সামষ্টিক অর্থনীতি বিবেচনা করা যাবে না। প্রত্যেক দেশেই সকল খাত যে সমভাবে চলবে এমনটি নয়।’
সারাবিশ্বের অর্থনীতির বিবেচনায় বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘শেয়ারবাজার চাঙ্গা করতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ দরকার। একটা জায়গা নিয়ে সবসময় আমরা চিন্তাগ্রস্থ , সেটি হচ্ছে পুঁজিবাজার। আমরা যেকোনো মূল্যে পুঁজিবাজার শক্তিশালী করতে চাই।’
‘পুঁজিবার হচ্ছে অর্থনীতির রিফ্লেকশন, অর্থনীতির যে ফান্ডামেন্টাল সে ফান্ডামেন্টালের ওপর সবসময় অবস্থান করে পুঁজিবাজার। কিন্তু আমাদের দেশের পুঁজিবাজার কেন যেন অর্থনীতির সাথে অ্যালায়েন নয়। অর্থনীতির যে গতিশীলতা তার সাথে পুঁজিবাজার যায় না।’
অর্থমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে বর্তমানে শুধু রূপালী ব্যাংকের শেয়ার রয়েছে বেসরকারি খাতে। আর শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন অন্য তিনটি বাণিজ্যিক ব্যাংকেরও শেয়ার পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
সরকারি মালিকানাধীন চারটি ব্যাংকের শেয়ার একযোগে পুঁজিবাজারে ছাড়া হলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী। তার মতে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য ভালো মৌল ভিত্তির কোম্পানির শেয়ার অফলোডের কোনো বিকল্প নেই।
অর্থমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো শেয়ার ছাড়লে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বাজারে ফিরে আসবে বলে আশা করা যায়। কারণ ব্যাংকগুলোর মালিক রাষ্ট্র, যে কোনো ধরনের নেতিবাচক পরিস্থিতিতেও এসব ব্যাংকের গ্যারান্টার রাষ্ট্র নিজেই। ফলে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ছাড়া হলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে। ইতোমধ্যে পুঁজিবাজারে সূচক বাড়াতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন, অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।