খবর৭১ঃ বাংলাদেশ থেকে কৃষি, হসপিটালিটি, সিকিউরিটি সার্ভিসে নিরাপত্তা কর্মী ও চালক নিতে চায় কাতার। তবে দেশটি বিএমইটির ডাটাবেইজ থেকে সিলেকটিভ ও প্রশিক্ষিত কর্মী নিতে চায়।
বৃহস্পতিবার বিকালে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে কাতারে বাংলাদেশি কর্মী প্রেরণ নিয়ে তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সচিব মো. সেলিম রেজা।
বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাস ছয়েক আগে কাতারের শ্রমবাজার বন্ধ করা হয়। গতকাল থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নিজেদের শ্রমবাজার খুলে দিয়েছে কাতার। তবে এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে দেশটি। বিশেষ করে যে চারটি সেক্টরে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে, সেটি হবে দেশটির বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী। সেজন্য বিএমইটির ডাটাবেইজ থেকে সিলেকটিভ লোকই নেবে দেশটি।
সেলিম রেজা জানান, গত ৩-৪ ফেব্রুয়ারি দোহায় দুই দেশের যৌথ কারিগরি কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার বিষয়ে সম্মত হয় কাতার। কাতার জানিয়েছে, তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেক দক্ষ কর্মী নিতে চায়। তবে অনলাইন নিবন্ধন ছাড়া কোনো কর্মী নেবে না।
সচিব সেলিম রেজা বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে আরও অধিক পরিমাণ দক্ষ কর্মী নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে কাতার। বিশেষ করে কৃষি, হসপিটালিটি ও সিকিউরিটি সার্ভিসে নিরাপত্তা কর্মী নেবে। এছাড়া দেশটি জানিয়েছে, তাদের বিভিন্ন দেশ থেকে ৭০০০ হাজার চালক নেবে তারা। আমাদের এখান থেকে তারা ১৫০০ চালক নেবে।’
কাতার চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে অধিক সংখ্যক কর্মী নেবে বলে আশাবাদী সচিব।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে কাতার যেতে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৭৮০ টাকা খরচ হলেও সামনের দিনগুলোতে বিনা খরচে কাতারের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী নিতে আগ্রহী বলেও জানান সচিব সেলিম রেজা।
সচিব বলেন, ‘কাতার আমাদের এখান থেকে লোক নিতে চায়, কারণ আমাদের কর্মীরা খুব পরিশ্রমী। তারা আমাদের কর্মীদের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। তবে তারা বলেছে, তারা কোনো দেশ থেকে অদক্ষ লোক নেবে না। তাছাড়া আমাদের কর্মীদের ভালো করে প্রশিক্ষণ দিয়ে সেখানে পাঠাতে বলেছে তারা। বিশেষ করে আরবি ভাষা ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ লোক পাঠাতে বলেছে তারা।’
কাতারে গমনেচ্ছুদের মধ্যে পাইপলাইনে থাকা কর্মীদের ভাষা দক্ষতা ও বিএমইটির ডাটাবেইজ দেখতে খুব শিগগিরই দেশটির শ্রমবাজার বিষয়ক মন্ত্রী একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে বাংলাদেশ সফর করবেন। এ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ‘কাতার খুব শিগগিরই লেবার টেকনিক্যাল টিম নিয়ে বাংলাদেশে আসবেন। অনলাইন ডাটাবেইজ ও ভাষা দক্ষতা দেখবেন।’
কাতারের শ্রমবাজার খোলার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দেশটি সফরে যান। সেখানে ২ ফেব্রুয়ারি সচিব শ্রমবাজার খোলা নিয়ে কাতারের শ্রমবাজার মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এর দুইদিন পর ৪ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের প্রতিনিধি দলের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সচিব বলেন, কাতারে অনুষ্ঠিতব্য ‘ফিফা ২০২২’ এবং কাতারের ‘ভিশন ২০৩০’ উপলক্ষে সিকিউরিটি সার্ভিস, সেবা খাত ও অন্যান্য খাতে কাতারে ব্যাপক কর্মী চাহিদা রয়েছে। দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মীদের সুনাম ও চাহিদাও ব্যাপক।’
সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে আমরা প্রস্তুত। তবে মালয়েশিয়া এক্ষেত্রে দেরি করছে। ওনাদের মন্ত্রী বলছেন, শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে আমাদের এখান থেকে লোক নিতে চায়। কিন্তু শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে কিভাবে নেবে সেটাতো বোঝাতে হবে।’
মন্ত্রী আরো জানান, মালয়েশিয়া সরকার কর্মী নেয়ার ক্ষেত্রে প্রেরিত কর্মীদের ক্লিয়ারেন্স চায়।