শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : শার্শা’র পল্লীতে চুরির অপবাদ সইতে না পেরে ৪ বছরের শিশু কণ্যাকে হত্যার পর অন্তসত্ত্বা মায়ের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার সকালে যশোরের শার্শা উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে এ মর্মাহত ঘটনা ঘটে।
আত্মহত্যাকারি অর্ন্তসত্ত্বা জুলেখা খাতুন জুলি (২৪) রামচন্দ্রপুর গ্রামের আল মামুনের স্ত্রী এবং হত্যার সিকার ৪বছরের শিশু কণ্যা আমেনা খাতুন(৪) আল-মামুনের কণ্যা।
স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় আল-মামুনের ৪বছরের শিশুকণ্যা আমেনা খাতুন একটি স্বর্ণের চেইন গলায় দিয়ে বাড়ির পাশের একটি মুদি দোকানে যায়। তখন, মুদি দোকানদার আলাউদ্দিন ওরফে গ্যাদার মেয়ে জুলি খাতুন চেইনটি দেখে তার হারিয়ে যাওয়া চেইন বলে দাবি করে। বলে এটা তার ৫/৬ মাস আগে হারিয়ে গিয়েছিলো। এক পর্যায়ে দোকানদার গ্যাদার মেয়ে জুলি চেইনটি রেখে দিয়ে চুরির অপবাদ দেয়।
এরপর জুলেখা ও তার মেয়ে আমেনা বাড়ি ফিরলে শশুর শাশুড়ী রাগারাগি করে। রাত্রে খাওয়ার পর যার যার ঘরে চলে যায়। সকাল ৯ টার সময় মা-মেয়ে ঘর থেকে বের না হলে ডাকাডাকির একপর্যায় ঘরের দরজা ভেঙ্গে ফেলা হয়। দেখে জুলেখা গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে আর শিশু মেয়েটি অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে করে সকলের অভিমত, হয়ত: মেয়েটিকে বালিশ চাপা দিয়ে অথবা শ্বাস রোধ করে হত্যার পর “মা” আতœহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে জুলেখা খাতুন জুলির স্বামী আল-মামুম জানায়, প্রতিদিনের ন্যায় তার স্ত্রী তাকে সকালে খেতে দেওয়ার পর সে কাজে চলে যায়। সকাল ৯ টার দিকে ফোনে খবর আসে তার বাড়িতে স্ত্রী ও মেয়ে আতœহত্যা করেছে। এরপর সে বাড়ি এসে দুইজনের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে।
পাশের বাড়ির জনৈক নারী বলেন, মামুনের স্ত্রীর নামে চুরির অপবাদ দেওয়ায় লজ্জায় ঘৃনায় সে নিজের শিশু কণ্যাকে হত্যা করে নিজেই আতœহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মু. আতাউর রহমান বলেন ঘটনা স্থল হতে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোরে পাঠানো হয়েছে। আর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো- নিহতর স্বামী আল-মামুন, মুদি দোকানদার আলাউদ্দিনের স্ত্রী রেসমা বেগম ও তার মেয়ে জুলি খাতুন।