খবর৭১ঃ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নিজের ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সকাল ৮টায় ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে তিনি ভোট দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লিগ মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস।
আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ঢাকার দুই সিটিতে মোট ২ হাজার ৪৬৮টি ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
প্রথমবারের মতো ঢাকা সিটি নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকার দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সময়ে ঢাকা উত্তরে ৩৬টি ও দক্ষিণ সিটিতে ৫৭টি ওয়ার্ড ছিল। এবারের দুই সিটিতে ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ড সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এতে বেড়েছে ভোটার ও কেন্দ্র সংখ্যাও। এ নির্বাচনে দুই সিটিতে ২ হাজার ৪৬৮টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন ভোটার। সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন ওয়ার্ডগুলোর অনেক জায়গায় যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো নয়। এছাড়া দুই সিটিতে বড়ো দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। সবমিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। শুধু তাই নয়, ইভিএমের গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নের অনেক উত্তর মিলবে এ নির্বাচনে।
গত ১০ জানুয়ারি ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দুই সিটির নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে টানা ২০ দিনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শেষ হয়েছে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে। দীর্ঘদিন পর ভোটের মাঠে সমান্তরালে রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা গেছে। এই উত্তেজনার মধ্যে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের দক্ষিণের প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা ইশরাক হোসেন। পিছিয়ে ছিলেন না উত্তরের আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম এবং বিএনপির তাবিথ আউয়ালও। এছাড়া অন্য সব মেয়র প্রার্থীসহ কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচারে বেশ ব্যস্ত সময় পার করেছেন। প্রচারণা চলাকালে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘শঙ্কার’ মেঘ কাটছে না। ‘বহিগারগত সন্ত্রাসী’ ঢাকায় অবস্থান নিচ্ছে এমন অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) পালটাপালটি অবস্থান নিয়েছে বড়ো দুই দল। আচরণবিধি লঙ্ঘন ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি ইসিকে। বরং ভোটের সব দায়িত্ব মাঠ প্রশাসনের ওপর ছেড়ে দিয়ে নিজেরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন।
ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ ৯ দলের ১৩ মেয়র প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন। উত্তর সিটির ৬ মেয়র প্রার্থী হলেন—আওয়ামী লীগের মো. আতিকুল ইসলাম (নৌকা), বিএনপির তাবিথ আউয়াল (ধানের শীষ), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) আহম্মেদ সাজেদুল হক (কাস্তে), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ (হাতপাখা), পিডিপির শাহীন খান (বাঘ) ও এনপিপির মো. আনিসুর রহমান দেওয়ান (আম)। এই সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৫৪টি পদে ২৫১ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১৮টি পদে ৭৭ জন লড়ছেন।
দক্ষিণে মেয়র পদে সাত প্রার্থী হলেন—বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নুর তাপস (নৌকা), বিএনপির ইশরাক হোসেন (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি—জাপার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের মো. আবদুর রহমান (হাতপাখা), এনপিপির বাহরানে সুলতান বাহার (আম), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আকতার উজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লা (ডাব) ও গণফ্রন্টের আব্দুস সামাদ সুজন (মাছ)। দক্ষিণ সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৭৫টি পদে ৩২৭ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ২৫টি পদে ৮২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।