খবর৭১ঃ আগামী পাঁচ বছরে দেশের ভেতরে ও বাইরে এক কোটি পাঁচ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, মেগা প্রজেক্টগুলো বাস্তবায়ন ও অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির মাধ্যমে এ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) বৈঠকের শেষ দিনে আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিনের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় ও শেষ দিন অনুষ্ঠিত চার অধিবেশনে জলানি নিরাপত্তা, সবার জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা, মানসম্মত শিক্ষা এবং টেকসই শহরায়ন নিয়ে আলোচনা হয়।
অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সমাপনী অধিবেশনে অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেম, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো। অধিবেশন পরিচালনা করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ।
ব্যবসায়বান্ধব, ম্যানুফ্যাকচারিং-বান্ধব ও রপ্তানি-বান্ধব ট্যাক্সরেজিম সৃষ্টি করা হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। বলেন, সরকারি বিনিয়োগে দেশীয় অর্থায়ন নিশ্চিত করার জন্য মোট রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে। আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছি। এগুলো নানারকম সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
দুই দিনের বৈঠকে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থের খুব বেশি সমস্যা হবে না। যেসব সম্ভাবনাময় জায়গা আমাদের রয়েছে, সেগুলো উন্মুক্ত করা গেলে সম্পদের সমস্যা হবে না। আমরাদের রাজস্ব আয় কম। কিন্তু যতটা কম বলা হয় ততটা কমও নয়।’
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই, যেখানে বাংলাদেশের মতো বিভিন্ন শিল্পে এত করছাড়া দেয়। আগামীতে আমরা যেসব খাতে ছাড় ও প্রণোদনা দিচ্ছি, সেগুলোর একটা হিসাব করা হবে।’এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য এই বিডিএফ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বপ্লোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে গেলে কিছুটা চাপ তৈরি হলেও নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। কিছু পেতে জহলে কিছু দিতে হয়। গত ১০ বছরে প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশে^র অনেক দেশের চেয়ে আমরা এগিয়ে রয়েছি। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর, হংকং ও মালেয়শিয়াসহ অনেক দেশকে ছাড়িয়ে যাবে।’
সমাপনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা জরুরি। কেননা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর ১০০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু একটি সিঙ্গেল পেনিও চোখে পড়েনি।
এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশে ব্যাপক বিনিয়োগ দরকার উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ জন্য প্রচুর সম্পদ প্রয়োজন। সেই সঙ্গে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে আমরা কাজ করছি। এগুলো কাজে লাগবে।
এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ এমডিজির মতোই সাফল্য নিয়ে আসবে বলে আশা করেন ড. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের পরামর্শ অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ চলছে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ আমাদের বড় ইনোভেশন।’
বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো বলেন, এ জন্য যা যা করণীয় করতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।