খবর৭১ঃ ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের দুই দিন আগে কমিশনকে না জানিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মুজিববর্ষের সভা করা উচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা। তিনি বলেন, এই সভাটা তাদের না করাই উচিত ছিল। আর করার দরকার হলে আমাদের অনুমতি বা পরামর্শ নেয়া উচিত ছিল।
বৃহস্পতিবার বিকালে নির্বাচন কমিশন ভবনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বেঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সভা প্রসঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধি দলের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আজকে সভার বিষয়ে তারা আগে আমাদের কিছু জানায়নি। পরে ওনারাই (বিএনপি) জানালেন জনসভা হচ্ছে। পরে চেক করে দেখলাম সভা হচ্ছে। সেটা নির্বাচন সংক্রান্ত জনসভা নয়, মুজিববর্ষের প্রস্তুতি নিয়ে সভা হচ্ছে। আমাদের কাছে তারা বলেনি, সেখানে নির্বাচন নিয়ে যদি কিছু না বলে তাতে নির্বাচনের কোড অব কনডাক্ট ভায়োলেট হবে কিনা তা আলাদাভাবে বলা নেই। তবে আমি মনে করি নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সভাটা তাদের না করাই উচিত ছিল। আর করার দরকার হলে আমাদের অনুমতি বা পরামর্শ নেয়া উচিত ছিল। কিন্তু তারা সেটি নেননি, আমরা জানিই না।’
নির্বাচনের পর্যবেক্ষক নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য বিধিতে আছে তারা যেতে পারবে। তাদের নিবন্ধন প্রয়োজন হবে না। স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা তো বাইরে থেকে আসেনি, তারা এখানকার। বিভিন্ন দূতাবাসে যারা আছেন তারা এখানকার। তারা তালিকা দিলে আমরা পরীক্ষা করে তাদের অনুমতি দিতে পারি। সে অনুমতি আছে, গাজীপুরসহ বিভিন্ন সিটি নির্বাচনেও তারা পর্যবেক্ষণ করেছে। তাদের উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই থাকবে। তারা যেন বিধির বাইরে যেন কোন রকম আচরন করতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের সতর্কতা থাকবে।’
নূরুল হুদা বলেন, যে কোনো সময়ের চেয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে। প্রার্থীরা তাদের প্রচার চালাচ্ছেন। কোনো বাধা দেখি না। আমাদের কাছে ধর পাকড়ের তথ্য নেই। কোনো ক্রিমিনাল, সন্ত্রাস, বোমাবাজ যদি এখানে আসে তাদেরকে তো পুলিশ নজরদারিতে রাখবে এবং ধরবেই।
বাসা বাড়িতে তল্লাশি চলছে বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘কোনো বাসা বাড়িতে তল্লাশি করা রেইড করা হচ্ছে না। অন্যান্য জায়গায় যদি বাইরে থেকে এসে থাকে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছি নিষ্প্রয়োজনে কেউ যেন ঢাকায় না আসে। আবার বলেছি ভোটকেন্দ্রের চারপাশে যেন নিষ্প্রয়োজনীয় কোনো জটলা না থাকে। তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। ভোট দিয়ে যেন ভোট কেন্দ্রে কেউ না থাকে এটা আমরা চাচ্ছি।
ভোটকে কেন্দ্র করে ঢাকায় বহিরাগতদের প্রবেশের কোনো তথ্য নেই বলেও জানান কেএম নূরুল হুদা। কয়েকটি দেশের প্রতিনিধি আপনার সঙ্গে দেখা করেছে, কেউ মাতব্বরি করছে বলে মনে হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না এমনটি মনে হয়নি। তারা আমাদের আবস্থান জানতে চেয়েছে, আমরা তাদের বুঝিয়েছি তারা সন্তুষ্ট হয়ে এখান থেকে চলে গেছে। আমাদের প্রস্তুতিতে তারা খুশি এ কথা বলেছে।’
নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের জন্য ইসি সহায়ক শক্তি, বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, এ অভিযোগ মোটেই সত্য না। আমরা নিরপেক্ষ দৃষ্টি ভঙ্গিতে সাংবিধান প্রতিষ্ঠান হিসাবে আমাদের যে দায়িত্ব আইন কানুন মেনে সেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি আমরা। আমরা কারো সহায়ক না, কারো পক্ষে বা বিপক্ষে না। বিধিতে আইনে আমাদের যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেই দায়িত্ব আমরা পালন করে যাচ্ছি।