হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে শুঁটকি উৎপাদন শুরু; কোটি টাকার শুঁটকি বিদেশে রপ্তানির আশাবাদ

0
481
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে শুঁটকি উৎপাদন শুরু
ছবিঃ সংগৃহীত

খবর৭১ঃ

মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে অর্ধশতাধিক ঘেরে শুঁটকি উৎপাদন পুরোদমে শুরু হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও দেশের চাহিদা মিটিয়ে বানিয়াচং থেকে কোটি টাকার শুঁটকি বিদেশে রপ্তানি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

বানিয়াচংসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুস্বাদু শুঁটকি কয়েক বছর ধরে ঢাকা, চিটাগংসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি হচ্ছে। বর্তমানে জেলে পল্লীগুলোতে শুঁটকি শুকানোর ধুম পড়েছে। উপজেলার রত্না, ভাটিপাড়া, আতুকুড়া, মিনাটের গাঙ ও নদীর চরগুলোতে অর্ধশতাধিক শুঁটকি মহালে দেড় থেকে দুই হাজার জেলে শুঁটকি শুকানোর কাজে ব্যস্ত।অন্যান্য এলাকার জেলেরা ইউরিয়া সার, লবণ ও বিষাক্ত পাউডার দিয়ে শুঁটকি উৎপাদন করেন। বানিয়াচংয়ে শুঁটকি ঘেরগুলোতে বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার না করায় এখানকার শুঁটকি সুস্বাদু এবং আলাদা কদর আছে। বানিয়াচংয়ের জেলেরা কোনো কিছু মিশ্রণ ছাড়া প্রখর রোদের তাপে শুঁটকিগুলো শুকান বলেই এখানকার শুঁটকি খুবই সুস্বাদু।

জেলে পল্লীগুলোতে শুকানো শত শত মণ শুঁটকি ক্রয় করতে আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে গুদাম মালিকরা দলে দলে হাজির হচ্ছেন এবং অনেকেই জেলেদের অগ্রিম টাকা দিয়ে যাচ্ছেন।বানিয়াচংয়ের ভাটিপাড়ার জেলে নিখিল দাস বলেন, আমাদের এখানে উৎপাদিত শুঁটকির মধ্যে লইট্যা, রূপচাঁদা, পুঁটি, চিংড়ি ও বাইম শুঁটকি অন্যতম। এসব এলাকার উন্নতমানের শুঁটকি জেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশের অন্যান্য জেলায়ও সরবরাহ করা হচ্ছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে তা এখন রপ্তানি হচ্ছে দুবাই, সৌদি আরব, কাতার, মালয়েশিয়া, ওমান, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। এসব শুঁটকি রপ্তানি করে কোটি টাকা আয় করছেন বানিয়াচংয়ের ঘের মালিকসহ বড় বড় গুদাম মালিকরা।স্থানীয় জেলেরা জানান, বানিয়াচংয়ের জেলেরা শুঁটকি উৎপাদন করতে সরকারি-বেসরকারি কোনো সাহায্য-সহায়তা পান না।

নিজ উদ্যোগে তারা কাঁচা মাছ শুকিয়ে শুঁটকি উৎপাদন করেন। শুঁটকি উৎপাদনকারী জেলেদের কোনো পৃষ্ঠপোষকতা বা ব্যাংক ঋণ সুবিধা না থাকায় তারা ধরনা দেন এলাকার প্রভাবশালী বা শহরের গুদাম মালিকদের কাছে। গুদাম মালিকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নেওয়ার কারণে অনেক সময় স্বল্পমূল্যে শুঁটকিগুলো গুদাম মালিকদের হাতে তুলে দিতে হয়। বানিয়াচংয়ের তিন থেকে চার হাজার জেলের অন্যতম আয়ের উৎস এই শুঁটকি ঘের। শুকনো মৌসুমে শুঁটকি শুকিয়ে তা মালিকদের কাছে বিক্রি করে চলে তাদের জীবন-জীবিকা।মামু ভাগিনা শুঁটকি আড়তের মালিক ও রপ্তানিকারক হেকিম উল্লা জানান, প্রতি বছর বানিয়াচং থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয় প্রায় কোটি টাকার শুঁটকি।

নদী ও হাওর থেকে আহরণ করা মাছ আধুনিক পদ্ধতিতে শুকানোর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় জেলেদের বাড়ির সামনে রোদে শুঁটকি শুকাতে হয়। তাছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামীণ সড়কপথগুলো উন্নত না হওয়ায় উৎপাদিত শুঁটকি দূরদূরান্তে সরবরাহ করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে এখানকার শুঁটকি কম খরচে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো যেত। শুঁটকি শুকানো কাজে নিয়োজিত জেলেরা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরও ব্যাপক হারে শুঁটকি উৎপাদন করার মাধ্যমে তা বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here