খবর৭১ঃ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে ১২৯টি ওয়ার্ডের ১১৫টিতেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। এদের অনেকেই দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে দলীয় প্রার্থী পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছেন।
কেউ কেউ আবার প্রার্থীর প্রতি দলীয় সমর্থন প্রত্যাহার করে উন্মুক্ত করে দেয়ার অনুরোধ করেছেন। দলের সমর্থন পেতে আবেদন করা একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীই ৭০ জন। এবারের নির্বাচনে উত্তরে ২০ জন কাউন্সিলর দলীয় সমর্থন পাননি। তাদের ১০ জনই দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করছেন।
আর ঢাকা দক্ষিণের ৭৫টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীই ২২২ জন। বর্তমান ১৯ জন কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের সমর্থন পাননি। তাদের মধ্যে ১১ জনই দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের দফতর সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত দলীয় সমর্থনবঞ্চিত অর্ধশতাধিক প্রার্থী দলীয় সমর্থন পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেছেন। এদের অনেকে আবার উন্মুক্ত নির্বাচনের কথাও বলেছেন। সব বিবেচনায় ইতিমধ্যে তিনজন প্রার্থীর সমর্থন বাতিল করে নতুন প্রার্থী দেয়া হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১১ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ডা. মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বাবুল। তিনি এই ওয়ার্ডে দলের সভাপতি। গত ১ জানুয়ারি স্থানীয় দলের ৩০ জন নেতার স্বাক্ষরযুক্ত আবেদন ওবায়দুল কাদেরের কাছে জমা দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন- বর্তমান কাউন্সিলর ও দলীয় সমর্থন পাওয়া হামিদুল হক শামীম ক্যাসিনো খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার পদলেহনকারী। যিনি সভাপতি কর্তৃক ২০০৪ সালে ঢাকা মহানগর যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃত।
২০১৫ সালে অস্ত্রের মুখে জোর করে আমাকে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে দেয়নি। হামিদুল হক কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। তাকে ব্যবহার করে ক্যাসিনো খালেদের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি দলের সুনাম ও অর্জন ক্ষুণ্ন করে।
জানতে চাইলে আক্তারুজ্জামান বাবুল সোমবার যুগান্তরকে বলেন, এর আগে দলের সমর্থন পেয়েও নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হয়েছি। এবার দলের মনোনয়ন পেতে সমর্থন পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছি। প্রয়োজনে ওয়ার্ডে নির্বাচন উন্মুক্ত রাখার কথাও দলের সাধারণ সম্পাদককে বলেছি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির মাতুয়াইলে ৬৫নং ওয়ার্ডে দলের মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীকে নিয়ে আপত্তি তুলেছেন দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, ওই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া সামসুদ্দিন ভূঁইয়া সেন্টু বিতর্কিত।
এমন দাবি তুলে তারা প্রার্থী বদলের জন্য দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে চিঠি দিয়েছেন। মাতুয়াইল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শান্তনু খান শান্ত স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে- ‘আমরা ৬৫নং ওয়ার্ডের সব কাউন্সিলর প্রার্থী আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি, যে ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়ন দিলেন, সে এ অঞ্চলের একজন চিহ্নিত বিএনপির লোক, স্বাধীনতাবিরোধী মনোভাবাপন্ন।
আমরা বিস্ময় প্রকাশ করছি যে, এমন শুদ্ধি অভিযানের সময়ও সে কীভাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পায়। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল মতে, আগামীকাল বুধবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ যুগান্তরকে বলেন, শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক ওয়ার্ডে একক প্রার্থীই থাকবে। দলের থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই।