মিয়ানমারের কারণে মাদক ঠেকানো যাচ্ছে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

0
471
মিয়ানমারের কারণে মাদক ঠেকানো যাচ্ছে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

খবর৭১ঃ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের কারণে ইয়াবা নামক ভয়াবহ মাদক ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, যতবারই কথা বলেছি, মিয়ানমার ততবারই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা ইয়াবা বন্ধের বিষয়টি দেখবে। কিন্তু তাদের প্রতিশ্রুতির পরও পরও কাজ হচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তিনভাবে কাজ করছি। ডিমান্ড হ্রাস, সাপ্লাই হ্রাস এবং সর্বোপরি মাদকাসক্তদের পুনরায় কর্মক্ষম করতে নিরাময় কেন্দ্রের মাধ্যমে কাজ করছি।

তিনি বলেন, কারাগারের ধারণ ক্ষমতা ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে। এর বিপরীতে ৮০ হাজারের ওপর বন্দি রয়েছে কারাগারে। যার বেশিরভাগই মাদকের আসামী। মাদক মামলা নিষ্পত্তির জন্য আদালতের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রক্রিয়াধীন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদক নির্মূলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। তা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

দেশে মাদক প্রবেশের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে মাদক উৎপাদন হয় না। চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দেশে নানা পথে মাদক ঢুকছে। মাদকের একটি অংশ পাচার হয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে। অবশিষ্ট মাদক রয়ে যাচ্ছে দেশেই। ইদানীং মাদক চোরাচালানে নারীরাও যুক্ত হয়েছেন। আর মাদক ব্যবসায়ীরা শিশুদের বাহক হিসেবে ব্যবহার করছে। এগুলো আমরা লক্ষ্য করছি। কাজেই মাদক নির্মূলে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের সবাইকে মাদকের কুফল সম্পর্কে জানাতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। তবেই সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করা সম্ভব।

তিনি বলেন, সরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। যাতে মাদকাসক্তরা সুচিকিৎসা পান। ঢাকা কেন্দ্রীয় মাদক নিরাময় কেন্দ্র ও চারটি বিভাগীয় মাদক নিরাময় কেন্দ্রে মাধ্যমে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৮ হাজারেরও বেশি মাদকাসক্তকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে।

বিশেষ অতিথি গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন বলেন, চীন একটি আফিম খোরের দেশ ছিল। আফিম খেয়ে চীনের লোকজন দিনের পর দিন ঘুমিয়ে থাকতো। সেখান থেকে মাও সেতুং টেনে নিয়ে চীনকে আজকে কোথায় নিয়ে গেছে। আমরাও পারব মাদককে রুখে দিয়ে সোনার বাংলা গড়তে।

মাদককে রুখবো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়বো স্লোগান দিয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব শহীদুজ্জামান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ শুরু হয় তা থামবে না। চলমান থাকবে। মাদক কর্মক্ষম মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। কর্মক্ষমতা না থাকলে দেশ পিছিয়ে যায়। আমরা তা কোনোভাবেই সফল হতে দেব না। মাদকের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ এগিয়ে না আসলে কোনো বাহিনী বা অধিদফতরের পক্ষে মাদকমুক্ত করা সম্ভব নয়।

সভাপতির বক্তব্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, বর্তমানে মাদকের সাথে এর কারবারিদের নতুন আইনে বিচার কাজ শুরু হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে কর্মরত সংশ্লিষ্টদের আগের চেয়ে জনবল, যন্ত্রপাতি ও সুযোগ সুবিধা বেড়েছে। প্রত্যেক জেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কাজ শুরু করলেও এখনো ২৩টি জেলায় মাদক নিরাময় কেন্দ্র করা সম্ভব হয়নি। ওইসব জেলায় নিরাময় কেন্দ্র করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here