খবর৭১ঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন আলোচিত সভাপতি ইশরাত জাহান এশাকে বিয়ে করছেন সংগঠনটির সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে এ তথ্য জানান সোহাগ। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে আলোচিত ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা এশা।
তাদের বিয়ে নিয়ে মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী তাদের বিয়ের তারিখ ঠিক করে দিয়েছেন বলে সামাজিক ফেসবুকে প্রচার করেন সোহাগ।
এশা ও সোহাগের দুই পরিবারসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে সাইফুর রহমান সোহাগ লিখেন, ‘আমার অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বিয়ের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ঠিক করে দিয়েছেন। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। সবাইকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা। Happy New Year.’
জানা গেছে, কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা আন্দোলনের মধ্যে ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলে এক ছাত্রীর রগ কেটে দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এই গুজবের ওপর ভিত্তি করে হলের ছাত্রীরা তাকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। এরপর ছাত্রীরা এশাকে মারধর করেন এবং জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করেন।ওই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের মোর্শেদা নামের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীর রক্তাক্ত পায়ের ছবিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছবির সঙ্গে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, হলের ছাত্রীরা রগ কেটে দিয়েছেন এশা।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এশাকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন এবং ওই রাতেই ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এশাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করেন। একই সঙ্গে ঘটনাটি তদন্তে কমিটিও গঠন করে ছাত্রলীগ।
পরে জানা যায়, এশার কক্ষের জানালার কাঁচে লাথি মারতে গিয়ে পা কেটে যায় মোর্শেদার, তার পায়ের রগ কাটেননি কেউ। পরবর্তী সময়ে এশার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ।
ঘটনা তদন্তের দায়িত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান ওই সময় সংবাদ সম্মেলনে করে বলেন, সেই রাতে পরিস্থিতিটাই তখন এমন ছিল যে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এশাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল।
তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স বলেন, ওই ঘটনার সব ভিডিও এবং প্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ওই হলে ছাত্রলীগের একটি অংশ এশার ওপর নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। অভিযোগে (রগ কাটা বা পা কাটা) সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।