খবর৭১ঃ
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফেনীর নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি হবে। এ লক্ষ্যে আলোচিত এই হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্সের পেপারবুক প্রস্তুত হচ্ছে সরকারি ছাপাখানায় (বিজি প্রেস)।
জানুয়ারি মাসের মধ্যে এই পেপারবুক প্রস্তুতের কাজ সম্পন্ন হবে। পেপার বুক প্রস্তুত হলেই মামলাটি শুনানির জন্য হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স বেঞ্চে পাঠাবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গত ২৪ অক্টোবর অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৪(১)/৩০ ধারায় দেয়া ওই মৃত্যুদণ্ডের রায় অনুমোদনের জন্য মামলার নথি ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৩৭৪ ধারা মোতাবেক ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে পাঠান ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ। যা ১৪০/১৯ নম্বর ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। সিআরপিসির ৩৭৪ ধারায় বলা হয়েছে, দায়রা আদালত যখন মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন, তখন হাইকোর্ট বিভাগের নিকট কার্যক্রম পেশ করতে হবে এবং হাইকোর্ট বিভাগ অনুমোদন না করা পর্যন্ত দণ্ড কার্যকর করা হবে না।
হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখার কর্মকর্তারা নুসরাত হত্যা মামলার নথি পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করেন। পর্যালোচনা শেষে পেপারবুক হিসেবে ছাপানোর জন্য নথি ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিজি প্রেসে পাঠিয়ে দেন। এখন ছাপার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত: হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হয়ে থাকে সালের ক্রম অনুসারে। সেই হিসাবে এখন ২০১৪/১৫ সালের ডেথ রেফারেন্স মামলার শুনানি চলছে। বর্তমানে ৭৬০টি ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এসব মামলায় সাড়ে ১ হাজার ৭০০ ফাঁসির আসামি কারাগারের কনডেম সেলে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। আর গড়ে বছরে হাইকোর্টে ৬০-৭০টি ডেথ রেফারেন্স মামলার নিষ্পত্তি হয়ে থাকে।
ফলে স্বাভাবিক নিয়মে নুসরাত হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স উচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি হতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিচারপ্রার্থীদের অপেক্ষা করতে হতো। বিলম্বের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই ডেথ রেফারেন্স মামলার নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়। এর আগে পিলখানা হত্যা মামলা, সিলেটের শিশু রাজন ও খুলনার রাকিব, সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ এস আলী এবং নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার ডেথ রেফারেন্স অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ।