খবর৭১ঃ
ছবিতে যে নারীকে দেখা যাচ্ছে তার জন্ম প্রায় ৬ হাজার বছর আগে। বর্তমানে তার নাম ‘লোলা’। কঙ্কাল নয়, ডেনমার্কে পাওয়া গিয়েছে তার খাওয়া ‘চুইং গাম’-এর একটি অংশে লেগে থাকা মুখের লালা। ধারণা করা হচ্ছে কোন গাছের আঠালো রস জাতীয় কিছু চাবায় সে যেখান থেকে মিলেছে মানুষ পরিপূর্ণ জিনম। প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এত পুরাতন কোন মানুষের হাড় পাওয়া যায়। কিন্তু হাড় ব্যতীত মানুষের পরিপূর্ণ জিনম থেকে ডিএনএ পাওয়া এবারই প্রথম, যা থেকে দারুণ কার্যকর ভাবে এই নারীর প্রতিচ্ছবি তৈরি করেছে গবেষকেরা।
বিবিসি জানায়, কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক দল প্রথম এই নারীর ডিএনএ খুঁজে পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হেনা স্কুডার বলেন, আসলে চুইং গাম বলে আমরা যেটা বোঝাচ্ছি সেটা কোন একটি গাছের কস ছিলো যা এই নারী চাবিয়েছিলো। সেখানে এই নারীর দাঁতের ছাপ পাওয়া যায়। আমরা সেই সময়কার কোন মানুষের পরিপূর্ণ ডিএনএ এতদিন পায়নি।
গবেষক দল জানায়, এই নারীর গায়ের রং কিছুটা কালো ছিলো। আর চোখ ছিলো নীল। তার চুল ছিলো বাদামী বর্ণের।
তার জেনেটিক ডিকোডিং করে গবেষকরা ধারণা প্রকাশ করে, এই নারী ইউরোপের মূল ভূখণ্ডের শিকারি গোষ্ঠীদের একজন ছিলো। স্ক্যান্ডিনেভিয়ানদের মত নয় সে। আর তার প্রমাণ বহন করছে বাদামী চুল ও নীল চোখ। বরফ যুগের সময় যখন হিমবাহের প্রকোপ কমে আসে তখন নিজ গোষ্ঠীর সঙ্গে সে উত্তর ভূখণ্ডের দিকে এসে বসবাস শুরু করে।
কিন্তু কেনো এই বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ? তার উত্তর দিলেন ড. হেনা। তিনি বলেন, এই ডিএনএ থেকে আমরা যেই তথ্য পেয়েছি, সেখান থেকে বোঝা যাচ্ছে আমাদের পূর্বসূরিরা কেমন ছিলো, তাদের খাদ্যাভ্যাস কী ছিলো, কিভাবে তার জীবন যাপন করত। আর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, কিভাবে তাদের থেকে ধীরে ধীরে আমরা বর্তমান মানুষে পরিণত হলাম? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে দারুণভাবে সাহায্য করবে এই ‘চুইং গাম’। বিবিসি।