খবর৭১ঃ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। সেতুর পিয়ারের উপর একের পর এক বসানো হচ্ছে স্প্যান। এবার বসানো হলো সেতুটির ১৯তম স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হলো মূল সেতুর দুই হাজার ৮৫০ মিটার অর্থাৎ প্রায় তিন কিলোমিটার। বুধবার দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ১৯তম স্প্যান বসানো হয়। পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির ঢাকাটাইমসকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রকৌশলী জানান, সকাল ৯টায় স্প্যানটি মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ভাসমান ক্রেন ‘তিয়ান-ই’ পিয়ার বহন করে পিয়ার-২০ ও ২১ এর সামনে নিয়ে আসে। এতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। এরপর ধীরে ধীরে স্প্যানটি পিয়ারের উপর স্থাপন শুরু হয়। দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে ১৯তম স্প্যানটি বসানো সম্পন্ন হয়। ধূসরের ১৯তম স্প্যানটি ‘৪-সি’ ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের।
হুমায়ুন কবির আরও জানান, চলতি মাসে আরও একটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ২৮ কিংবা ২৯ ডিসেম্বর ২০তম স্প্যান ‘৩-এফ’ সেতুর মাওয়া প্রান্তে ১৮ ও ১৯ নং পিয়ারে বসানো হতে পারে।
সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতুর মোট ৪২টি পিলারের মধ্যে বর্তমানে কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৩৫টির। সেতুর দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ইতিমধ্যে ৪১০টি রেল স্ল্যাব বসানো হয়েছে। দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১২৫টি স্ল্যাব বসানো সম্পন্ন হয়েছে। পদ্মা সেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে চীন থেকে মাওয়ায় এসেছে ৩৩টি স্প্যান।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয়েছে ১৮টি স্প্যান। প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ২০২১ সালে স্বপ্নের এই সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।