খবর৭১ঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘চক্রান্ত করে টেমস নদীর ওপার থেকে নাশকতার নির্দেশ দিয়ে আদালত প্রাঙ্গণকে রণাঙ্গন বানিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না। এই স্বপ্ন তাদের জন্য দুঃস্বপ্ন।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপির ধ্বংস বিএনপি নিজেরাই ডেকে আনছে। আওয়ামী লীগ শক্তিশালী বিরোধী দল চায়। কিন্তু বিরোধিতার নামে নাশকতা সহ্য করা হবে না।’
সুন্দর ছবি, ব্যানারে ও পোস্টারে ছাপিয়ে নেতা হওয়া যাবে না এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা সুশৃঙ্খল আওয়ামী লীগ চাই, সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ চাই। বিশৃঙ্খলা চাই না। সুবিধাবাদীদের দলে চাই না। অতিথি পাখিদের স্থান হবে না আওয়ামী লীগে। ত্যাগী কর্মীদের নেতা বানানো হবে।’
শনিবার দুপুরে মহানগরীর লালদিঘির ময়দানে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চট্টগ্রাম বঙ্গবন্ধুর ঘাঁটি ছিলো, আজ শেখ হাসিনারও ঘাঁটি। এই ঘাঁটিতে দলের মধ্যে যে ফাটল ধরেছে তা নিরসন করতে হবে। মৌসুমি পাখি এবং পকেট ভারি যারা করবে আওয়ামী লীগে তাদের প্রয়োজন নেই।’
আজ সারা বিশ্ব শেখ হাসিনার প্রশংসা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গর্ব করি। বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা এই দুটি নামই সবার আদর্শ। তারা ছাড়া বাংলাদেশে রাজনীতির আদর্শ শিক্ষা নেওয়ার আর কিছু নেই।’
ওবায়দুল কাদের দেশে দুর্নীতি, টেন্ডারবাজিসহ সকল অপতৎপরতার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত শুদ্ধি অভিযান স্তিমিত হয়ে যায়নি উল্লেখ করে বলেন, ‘কখন যে কে জালে ধরা পড়বে আমি এখান থেকে বলতে পারছি না। এই শুদ্ধি অভিযান আমাদের সফল করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যারা মনে করেন একটা ধাক্কা দিলে আওয়ামী লীগের পতন হবে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। ক্ষমতা যদি চান তবে আরেকটা নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বহু কর্মী আছে। খারাপ লোকের কোনও প্রয়োজন নেই। বুয়েটে আবরারকে যারা হত্যা করে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কথায় কথায় যারা কলহ করে, যারা রাজশাহীতে অধ্যক্ষকে পানিতে ফেলে দেয় এ ধরণের কর্মীর আমাদের কোনও প্রয়োজন নেই। মাস্তানি করে, গডফাদারগিরি করে নেতা হওয়া যাবে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চট্টগ্রাম যেন খারাপ খবরের শিরোনাম না হয়, এটাই প্রত্যাশা করি। এই নগরে মেট্রোরেল হবে, টানেলের কাজ চলছে, চার থেকে ছয় লেন রাস্তা হয়েছে। আজ নেতা বাদল নেই, তাকে স্মরণ করেই বলছি, কালুরঘাটে রেল ও সড়ক দুটো সেতুই হবে।’
সাধারণ সভার প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি। সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
সভায় উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন , আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সংসদ সদস্য এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, চট্টগ্রাম মহানগরী আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।
উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতাসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকবৃন্দ।
সম্মেলনে উত্তর জেলা চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন হতে ১৫ থেকে ২০ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী যোগদান করেন।
সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব বিকেলে মহানগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে শুরু হয়। ঐ কাউন্সিলর অধিবেশন থেকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন। কেন্দ্রীয় নেতারা নতুন কমিটির নেতাদের নাম ঘোষণা করবেন বলে দলীয় সূত্র জানায়।