রুম্পার মৃত্যুঃ পলাতক স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র

0
442
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র পলাতক

খবর৭১ঃ রাজধানীর বেসরকারি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার মৃত্যুর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টির কিছু ছাত্র পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার বাবা পুলিশ কর্মকর্তা মো. রুককুন উদ্দিন। তিনি বলেন, যদি সে (রুম্পা) আত্মহত্যা করত, তাহলে নিজের বাসায় থেকেই করতে পারত। বাড়ি থেকে দূরে গিয়ে করতে হতো না। শুনেছি যে বাড়ির ছাদের নিচে শারমিনের লাশ পাওয়া গেছে, সেই বাড়িতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র থাকেন। তারা এখন নাকি পলাতক। শনিবার রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের সদর উপজেলার বিজয়নগরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রুককুন উদ্দিন।

রুম্পার বাবা বলেন, গত বুধবার সন্ধ্যায় বাসার নিচে এসে চাচাতো ভাই শুভর কাছে মোবাইল ফোন আর ব্যাগ রেখে স্যান্ডেল বদল করে বের হয় রুম্পা। বের হওয়ার সময় বাসায় থাকা মাকে মোবাইল ফোনে জানায়, জরুরি একটা কাজে বের হচ্ছেন। কাজ শেষ করেই ফিরে আসবেন। এরপর থেকে রুম্পা নিখোঁজ ছিলেন। দীর্ঘ সময় মায়ের কাছে মোবাইলটি থাকলেও ফোনে কল এসেছিল কি না, এটি তার মা লক্ষ করেননি। তবে বৃহস্পতিবার বিকালে দুটি ফোন আসে। দুটি ফোনই করেন সহপাঠীরা।

রুক্কন উদ্দিন বলেন, কিছুদিন আগে রাজধানীর বেইলি রোড থেকে রুম্পার একটি মোবাইল ফোন ছিনতাই হয়। এরপর তিনি মেয়েকে বলেছিলেন, রাতে কোনো কাজে বাড়ির বাইরে গেলে মোবাইল যেন সঙ্গে না নেন। বুধবার বাড়িতে ফোন রেখে যাওয়ার এটাই ছিল কারণ।

তিনি আফসোস করে বলেন, সারা জীবন ঢাকাতেই চাকরি করেছি। মেয়েকে আমিই দেখে রাখতাম। দুই বছর আগে পদোন্নতি হওয়ার পর প্রথমবার ঢাকার বাইরে যাই। ঢাকায় থাকলে হয়তো মেয়েকে রক্ষা করতে পারতাম।’ রাজধানীর বেসরকারি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার লাশ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। রুম্পার মৃত্যু হত্যা না আত্মহত্যা, পুলিশ এখনো এর কোনো কিনারা করতে পারেনি। তার পরিবারের দাবি, তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন না।

রুম্পার বাবা মো. রুককুন উদ্দিন হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক হিসাবে কর্মরত। মা নাহিদা আক্তার পারুল গৃহিণী। এক ভাই ও এক বোনের রুম্পা সবার বড়।

রুম্পা ২০১৪ সালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস্ স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি, ২০১৬ সালে ভিকারুন্নিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ এইচএসসি উত্তীর্ণ হন। রুম্পা স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। আর ছোট ভাই আশরাফুল আলম রাজধানীর ঢাকার ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে অধ্যয়নরত।

রাজধানী ঢাকার শান্তিবাগে একটি ফ্ল্যাটে মায়ের সঙ্গে থেকে পড়াশোনা করতেন রুম্পা ও তার ছোট ভাই। পড়াশোনার পাশাপাশি রুম্পা টিউশনি করাতেন। গত বুধবার টিউশনি শেষে বাসায় ফেরার পর রুম্পা। এরপর বাইরে কাজ আছে বলে আবার বাসা থেকে বের হন। কিন্তু এরপর রাতে আর বাসায় ফিরেননি। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাননি। বৃহস্পতিবার রুম্পার মা-সহ স্বজনরা রমনা থানায় গিয়ে লাশের ছবি দেখে তাকে শনাক্ত করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here