খবর৭১ঃ বহুল আলোচিত গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য কাদের খানও রয়েছেন।
গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এ রায় ঘোষণা করেন। ঘটনার প্রায় তিন বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হলো।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন কাদের খানের পিএস শামছুজ্জোহা, গাড়িচালক হান্নান, ভাতিজা মেহেদি, শাহীন ও রানা, চন্দন কুমার রায়। চন্দন পলাতক, অন্যরা জেলা কারাগারে আছেন। আরেক আসামি কসাই সুবল কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় মারা যান।
গত ১৯ নভেম্বর বিকেলে মামলার সাক্ষী ও আসামিদের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে ২৮ নভেম্বর রায়ের দিন ধার্য করেন বিচারক।
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গার মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন তৎকালীন এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকলী বুলবুল। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) আব্দুল কাদের খানসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার বাসা থেকে কাদের খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় ৩১ অক্টোবর। আদালতে মামলার বাদী, নিহতের স্ত্রী, তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৫৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। লিটন হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র মামলায় গত ১১ এপ্রিল কাদের খানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
যেভাবে রহস্য উদ্ঘাটনঃ
২০১৬ সালের ২ ডিসেম্বর সুন্দরগঞ্জে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকারীদের ফেলে যাওয়া ম্যাগাজিনের গুলির সঙ্গে লিটনের শরীরে পাওয়া গুলির মিল পাওয়া যায়। সেই সূত্র ধরে তিন ছিনতাইকারী মেহেদি, শাহীন ও হান্নানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা তিনজন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কাদের খানের নির্দেশে লিটন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাদের খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।