চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ৪ কোটির মেশিন কেনা হয়েছে সাড়ে ১২ কোটি টাকায়

0
820
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ৪ কোটির মেশিন কেনা হয়েছে সাড়ে ১২ কোটি টাকায়

খবর৭১ঃ মেশিনের বাজারমূল্য দুই কোটি ৮০ লাখ টাকা। কিন্তু চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সেটির ক্রয় মূল্য দেখিয়েছে ৯ কোটি ৯৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। চারটি ইকোকার্ডিওগ্রাফি মেশিনের বাজার মূল্য এক কোটি আট লাখ ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু সেগুলো ব্যয় দেখানো হয়েছে দুই কোটি ৬০ লাখ টাকা।

২০১৪ সালের ২৯ মে থেকে ২০১৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জন্য এসব চিকিৎসা উপকরণ ক্রয় করা হয়েছিল। অথচ বাজারমূল্য থেকে অতিরিক্ত মূল্যে কেনা ক্রয় করা এসব যন্ত্রপাতি এখন নষ্ট।

জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এমআরআই মেশিনটি গত প্রায় দেড় মাস ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।

এ মেশিন দিয়ে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি এমআরআই করা যেত। পক্ষান্তরে গত একমাস ধরে নষ্ট ইকোকার্ডিওগ্রাফি মেশিন। এ মেশিন দিয়ে দৈনিক ৮ জন রোগীর পরীক্ষা করা যেত। শরীরের শরীরের সূক্ষাতিসূক্ষ রোগ নির্ণয়ে অতি জরুরি এমআরআই মেশিন এবং হৃদরোগীদের জরুরি রোগ নির্ণয় করা হয় ইকোকার্ডিগ্রাফি মেশিনটি দিয়ে।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, ‘এমআরআই মেশিনটির একটি অংশ নষ্ট হওয়ায় সেটি এখন কাজ করছে না।

তবে এটি মেরামতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ইকোকার্ডিওগ্রাফি মেশিনটির ফিল্ম খুব ঝাপসা আসতেছে। তাই এটি দিয়ে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে আমরা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু ইতোমধ্যে এটির ওয়ারেন্টি চলে যায়। আর মেরামতও ব্যয়বহুল। এ ব্যাপারে আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যোগাযোগ করেছি।

অভিযোগ আছে, এটি নামে জেনারেল হাসপাতাল হলেও রোগীরা পায় না প্রয়োজনীয় সেবা। সাধারণ কোনো রোগ নিয়েও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গেলে চমেক হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। কোনো অপারেশন বা সার্জারির জন্য অপেক্ষা করতে হয় মাসের পর মাস। রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন আধুনিক মেশিন থাকলেও এসব দীর্ঘদিন ধরেই নষ্ট পড়ে থাকে। ভাল থাকলেও দায়িত্বশীলদের অবহেলার কারণে রোগীরা সেবা পায় না।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জন্য অতিরিক্ত মূল্যে চিকিৎসা উপকরণ ক্রয় করে মোট ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীসহ সাতজনকে আসামি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক বাদী হয়ে চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি (নম্বর ৪৬) দায়ের করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ডা. মো. আব্দুর রব, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অর্থোপেডিক সার্জারি) ডা. মো. মইন উদ্দিন মজুমদার, সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ডা. বিজন কুুমার নাথ, যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্ত্বাধিকারী মো. জাহের উদ্দিন সরকার, মেসার্স আহম্মদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মুন্সী ফারুক হোসেন ও এএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফতাব আহমেদ। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here