খবর৭১ঃ সম্পদ গোপন করা ও ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিপ্তরের (এলজিইডি) এক অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলীকে আসামি করে মামলা করেছে বগুড়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত কার্যালয়। সাবেক এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তার একক নামে স্থাবর ৭ লাখ ১২ হাজার ২৪৭ টাকা এবং চাকুরীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় ৫৪ লাখ ৪৬ হাজার ২৮০ টাকা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ আয়ের তথ্য পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার মামলাটি করেন দুদকের বগুড়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম। মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মো. আনিছুর রহমান সরদার। তিনি নওগাঁ জেলার সদরের বলিহার ইউনিয়নের পানিসাইল গ্রামের বাসিন্দা। দুদক এর বগুড়া কার্যালয় ২০০৮ সালের ২৩ জুন তারিখে আনিছুর রহমানকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করে। পরে ২০০৮ সালের ১৩ জুলাই তারিখে সম্পদ বিবরণী জমা দেন সাবেক এলজিইডি কর্মকর্তা।
আনিছুরের দেয়া বিবরণীতে নিজ নামে তার গ্রামের বাড়ি পানিসাইলে ১১টি সাফকবলা দলিলে সর্বমোট প্রায় ৫.১৪ একর জমি দেখানো হয়েছে। এছাড়া ঢাকার মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে একটি ফ্লাট ক্রয়ে অর্থ বিনিয়োগসহ ৩৮ লাখ ৯১ হাজার মূল্যের স্থাবর সম্পত্তি এবং ১৬ লাখ ২৭ হাজার ৫৫১ টাকার অস্থাবর সম্পত্তিসহ মোট ৫৫ লাখ ১৮ হাজার ৫৫১ টাকার ঘোষণা দেন। আর তার স্ত্রী আইরিন পারভিনের নামে জমি ও ফ্লাট ক্রয়, বাড়ি নির্মাণসহ মোট ৩৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পত্তি এবং ১২ লাখ ৯০ হাজার ৪১ টাকা অস্থাবর সম্পত্তিসহ মোট ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪১ টাকা সম্পদের বিবরণী দাখিল করেন তিনি। তবে আনিছুরের স্ত্রী আইরিন পারভিন গত ২০১০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে মারা যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।
অনুসন্ধানে দুদক আনিছুরের একক নামে ১৬ লাখ ২৭ হাজার ৫৫১ টাকার অস্থাবর এবং স্থাবর ৪৬ লাখ ৩ হাজার ২৪৭ টাকার সম্পত্তি অর্জনের সন্ধান পায়। এতে দুদক তার দেয়া বিবরণী বাদে ৭ লাখ ১২ হাজার ২৪৭ টাকার সম্পত্তি অর্জনের তথ্য গোপনের প্রাথমিক সত্যতা পায়। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২০০৪ সালের ২৬(২) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মামলার নথিতে বলা হয়, আনিছুর রহমান আয়কর প্রদান করতেন।
তার আয়কর নথি পর্যালোচনা করে বেতন বাবদ ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ৬৬৩ টাকা, কৃষি আয় ২ লাখ ৯০ হাজার ১০৫ টাকা, জমি বিক্রয় বাবদ ৮০ হাজার, মূলধনী আয় ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৩২১ টাকা এবং গ্রহ সম্পত্তির আয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মোট ৩১ লাখ ২৩ হাজার ৮৯ টাকার বৈধ উৎসের আয় পায় দুদক।
আনিছু্র রহমানের জ্ঞাত এই আয়ের উৎসের সঙ্গে দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া অসঙ্গতিপূর্ণ ৬২ লাখ ৩০ হাজার ৭৯৮ টাকার ব্যবধান হয় ৫৪ লাখ ৪৬ হাজার ২৮০ টাকা। এই টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন ও ভোগ দখলে রাখার প্রাথমিক সত্যতা পায় দুদক। এটি দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২০০৪ এ ২৭(১) ধারার অপরাধ।
মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, দুদকের অনুসন্ধানে অভিযুক্ত আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন করা এবং অসাধু উপায়ে সম্পদ অর্জনের সত্যতা পাওয়ায় মামলাটি করা হয়েছে।