খবর৭১ঃ গ্রামীণফোনের কাছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পাওনা দাবির প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া সাপেক্ষে হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকবে। অন্যথায় হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়ে যাবে।
আজ রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন। তিন মাসের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা না দিলে হাইকোর্টের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা থাকবে না বলে জানিয়েছেন গ্রামীণফোনের আইনজীবী মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী। মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, ২ হাজার কোটি টাকা বিটিআরসিকে পরিশোধের জন্য আদালত গ্রামীণফোনকে ৩ মাস সময় দিয়েছেন। বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব বলেন, আজকের আদেশের ফলে গ্রামীণফোনকে আপাতত ২ হাজার কোটি টাকা দিতে হচ্ছে।
আদালতে গ্রামীণফোনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ ফজলে নূর তাপস। গ্রামীণফোনের পক্ষ আরও ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
প্রায় ২৭টি খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি (বিটিআরসির ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি ও এনবিআরের ৪ হাজার ৮৬ কোটি) টাকা পাওনা হিসেবে দাবি করে গ্রামীণফোন লিমিটেডকে গত ২ এপ্রিল চিঠি দেয় বিটিআরসি। ওই পাওনা দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে গ্রামীণফোন নিম্ন আদালতে একটি মামলা করে ও পাওনা দাবির অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চায়। গত ২৮ আগস্ট ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর বিরুদ্ধে গ্রামীণফোনের পক্ষে গত ১৬ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। এর গ্রহণযোগ্যতার শুনানি নিয়ে গত ১৭ অক্টোবর হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন এবং ওই অর্থ আদায়ের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আবেদন করে, যা চেম্বার বিচারপতির আদালত হয়ে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আসে।
আপিল বিভাগ শুনানিতে বিটিআরসির পাওনা দাবির প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে গ্রামীণফোন এখন কত টাকা দিতে পারবে, তা জানতে চেয়েছিলেন।
শুনানিতে গ্রামীণফোনের আইনজীবী শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, অর্থমন্ত্রীসহ দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রতিনিধিদের নিয়ে গত ৩ অক্টোবরের অনুষ্ঠিত সভায় দুই কিস্তিতে ২০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। তবে শর্ত ছিল, গ্রামীণ ফোনের ওপর বিটিআরসির আরোপ করা সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা তুলে নেওয়া হবে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হতে পারে।
অন্যদিকে, বিটিআরসির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম বলেন, অন্তত পাওনার ৫০ ভাগ অর্থ গ্রামীণফোন জমা দিক। তারপর কমিটির মাধ্যমে বাকি অর্থ পরিশোধ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।