খবর৭১ঃ
নদীতে ইলিশ শিকারের সরকারি ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ বুধবার রাত ১২টা থেকে। তাই নদীতে ইলিশ শিকারে কোনো বাধা নেই জেলেদের। এজন্য আজ রাতেই ইলিশ শিকারে নদীতে নামবে জেলেরা।
সেই প্রস্তুতি দেখা গেছে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী এলাকায়। বুধবার সকাল থেকেই ভোলার জেলে পল্লীর নদীতে মাছ শিকারের জন্য তাদের সরঞ্জাম প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে নদীতে গিয়ে ইলিশ ধরে নিষেধাজ্ঞার সময় করা ধার-দেনা, ব্যাংক ও এনজিওর ঋণের কিস্তি পরিশোধের স্বপ্ন দেখছেন তারা।
ভোলার সদরের বিভিন্ন জেলে পল্লী ঘুরে দেখা গেছে, বুধবার মধ্যরাত থেকে মাছ শিকারের জন্য জাল, নৌকা, ট্রলারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম প্রস্তুত করছেন তারা। অনেক জেলে তাদের পরিবারের সদস্যদেরও নিয়ে এসব সরঞ্জাম প্রস্তুত করছেন। কোনো কোনো জেলে গুছিয়ে রাখা জাল রোদে শুকাচ্ছেন ও জালকে নতুন সুতা দিয়ে সেলাই করে মজবুত করছেন। আবার কোনো কোনো জেলে ট্রলারের ইঞ্জিন ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করছেন। এছাড়া কেউ কেউ আগে থেকেই নৌকা ও ট্রলার নদীতে নামিয়ে রাখছেন।
ভোলার ইলিশা ইউনিয়নের জংশন এলাকার জেলে মুজিবল হক ও কেরামত উল্লাহ জানান, সরকারের ২২ দিনের অভিযান আমরা সুন্দরভাবে মেনে নদীতে মাছ ধরতে যাইনি। রাত ১২টার পর নদীতে যাব। আশা করি অনেক ইলিশ শিকার করতে পারব।
ভোলার তুলাতুলি এলাকার জেলে ফোরকান মাঝি ও আলমগীর মাঝি জানান, নদীতে যেতে না পারায় টাকার অভাবে মহাজনের কাছ থেকে ধার করে বাজার করেছি। এ সময় ব্যাংক ও এনজিওর কিস্তির টাকা দিতে পারেনি। আজ নদীতে গিয়ে অনেক মাছ পাব আশা করি। সেই মাছ বিক্রি করে মহাজনের ধার-দেনা কিস্তির টাকা পরিশোধ করব।
ভোলা জেলা মৎস্য অধিদফতর তথ্যমতে জানা গেছে, ইলিশের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। তাই ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকারের ওপর সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ভোলার সাত উপজেলায় ১ লাখ ৩২ হাজার ২৬০ জন জেলের নিবন্ধন রয়েছে।
এ বছর মা ইলিশ নিষেধাজ্ঞার সময় ৮৮ হাজার ১১১ জেলেকে সরকারিভাবে ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়।
ভোলা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জানান, এবছর সরকারি নিষেধাজ্ঞা প্রায় ৯৯ ভাগ সফল হয়েছে। ৬০ ভাগ ইলিশ ডিম ছেড়েছে। কিছু জেলে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে আমাদের হাতে ধরা পড়েছে। তাদের প্রশাসনের কাছে সোপর্দ করেছি। পরে তাদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নিষেধাজ্ঞার পর জেলেরা নদীতে গিয়ে অনেক বড় বড় ও ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ শিকার করতে পারবে। এতে তাদের ২২ দিনের অভাব দূর হবে।