নুসরাত হত্যাকাণ্ডঃ ডেথ রেফারেন্সের জন্য নথি হাইকোর্টে যাচ্ছে

0
536
ডেথ রেফারেন্সের জন্য নথি হাইকোর্টে যাচ্ছে

খবর৭১ঃ

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) নথি আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টে পাঠানো হবে। ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) হাফেজ আহমেদ গতকাল সোমবার এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পিপি হাফেজ আহমেদ বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ডের রায় অনুমোদনের জন্য মামলার নথি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে পাঠাতে হয়। সে জন্য ডেথ রেফারেন্সের নথি হাইকোর্টে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। আদালত যখন মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন, তখন হাইকোর্ট বিভাগের কাছে কার্যক্রম পেশ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগ অনুমোদন না করা পর্যন্ত দণ্ড কার্যকর করা হবে না। মঙ্গলবার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হবে।

বাদীর আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু বলেন, নুসরাত হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উচ্চ আদালতে শুনানির জন্য আইন মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গত ২৪ অক্টোবর নুসরাত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ। রায়ে এই মামলার প্রধান আসামি মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ আসামির সবাইকে ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন সোনাগাজী মাদ্রাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদদৌলা, উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মো. রুহুল আমিন, ছাত্র নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম, পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মো. জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে শাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, শিক্ষক হাফেজ আবদুল কাদের, প্রভাষক আবছার উদ্দিন, নুসরাতের সহপাঠী কামরুন নাহার মণি ও উম্মে সুলতানা পপি; আবদুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মো. শামীম ও মহি উদ্দিন ওরফে শাকিল।

রায় ও দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে সাত কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে আসামিরা আপিল করতে পারবেন বলে আদালত বলেন। নুসরাত হত্যা মামলায় চলতি বছরের ২০ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর ৪ মাস ৪ দিন পর এ মামলার রায় হয়।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তাঁর মা শিরিনা আক্তার সোনাগাজী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে না নেওয়ায় ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বোরকা পরা পাঁচজন। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে নুসরাতের মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে নুসরাত তাঁকে অগ্নিসংযোগকারীদের নাম উল্লেখ করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here