খবর৭১ঃ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও অসুস্থতা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের পরিচালক সরকারের শেখানো কথা বলছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, আজ বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যগত বিষয়ে গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া ভালো আছেন, চিকিৎসায় সন্তুষ্ট। গত সাত মাস আগে খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও বাতজ্বরজনিত বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এখন বেশিরভাগ অসুখের উন্নতি হয়েছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে অবস্থা স্থিতিশীল হয়েছে। পরিচালক বলেছেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও দেখা পাওয়া যায় না। প্রায় সময় ডাক্তাররা কেবিনে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান না।
বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ঝিলন মিয়া সরকার বলেছেন, খালেদা জিয়া চিকিৎসকদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেন এবং অত্যন্ত বিনয়ী ব্যবহার করেন। তিনি হাঁটতে পারেন না, অন্যজনের সহায়তায় তাকে হাঁটতে হয়। তার আরও চিকিৎসা প্রয়োজন। একজন অসুস্থ মানুষের লাইফ স্টাইল অনেক রকম হয়, এটা আমি স্বাভাবিক মনে করি। এসব বিষয়কে সম্মান করেই আমাদের চিকিৎসা করতে হয়। ম্যাডাম আমাদের সঙ্গে সবসময় হাসিখুশি কথা বলেন। কিন্তু চিকিৎসক হিসেবে নানা অসুবিধার কারণে আমাদেরও প্রতিদিন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করা সম্ভব হয় না।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, অধ্যাপক ঝিলন মিয়া সরকারের বক্তব্যের সঙ্গে পরিচালকের বক্তব্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ। পরিচালক সরকারের শেখানো কথা বলছেন। বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালকের বক্তব্যে এটি সুস্পষ্ট যে, ৭৫ বছর বয়সী অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কারাবন্দি রেখে বিনা চিকিৎসায় তিলে তিলে নিঃশেষ করার মহাআয়োজন চলছে।
তিনি বলেন, সরকারের মনোভাবই হাসপাতালের পরিচালকের বক্তব্যে প্রতিফলিত হয়েছে। কারণ তার বক্তব্যের অনেকাংশই এখতিয়ার বহির্র্ভুত। যা অযাচিত, অগ্রহণযোগ্য, অসৌজন্যমূলক, পূর্বকল্পিত, বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও কুৎসামূলক।
খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, উন্নতমানের চিকিৎসার অভাবে তিনি (খালেদা) এখন প্রতিনিয়ত চলৎশক্তিহীন হয়ে পড়ছেন। তাকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য দেশের সর্বস্তরের মানুষের অব্যাহত দাবি ও পরিবারের আবেদন-অনুরোধ কানে তুলছে না সরকার। তারা দেশনেত্রীকে কোনোভাবে মুক্তি না দিয়ে কারাগারে হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নে উন্মত্ততা দেখাচ্ছে। আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই।
এ সময় বিএনপির ভাইসচেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।