খবর৭১ঃ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করছে। তাদের আন্দোলন এ পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান উত্তাপ তৈরি করতে পারেনি। তারা আন্দোলনের নামে হাঁকডাক দিচ্ছেন।’
কাদের বলেন, ‘দলের নেতা ও স্বজনরা খালেদা জিয়ার অসুস্থতার যে চিত্র তুলে ধরেন, চিকিৎসকদের অবজারভেশনে তেমন নয়। উনার শারীরিক অবস্থা নিয়ে তারা যতটা না উদ্বিগ্ন, তারা চেয়ে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। এটা নিয়ে তাদের দুরভিসন্ধি রয়েছে।’
ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে যোগদানের পূর্বে শনিবার দুপুরে ফেনী সার্কিট হাউসে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দু’বছর হয়ে গেছে তিনি কারাগারে, বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য চোখে পড়ার মতো কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। তারা আন্দোলন করে তাদের নেত্রীকে কারামুক্ত করতে পারলে করুক, আমার আপত্তি নেই। তারা আন্দোলন করতে পারে না।
চলমান শুদ্ধি অভিযান নিয়ে মন্ত্রী বলেন, দুনিয়ার ইতিহাসে কোনো দেশে দলীয় সরকার তাদের দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করেছে বলে আমার জানা নেই। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনা নিজের দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিরল ঘটনা। তিনি প্রমাণ করেছেন, অপরাধ করলে নিজের দলেরও ছাড় নেই। শেখ হাসিনা সৎ সাহস দেখিয়েছেন।টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যেই দুর্নীতি করুক, এটা সরকারের নজরে আছে, সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। দুদক আওয়ামী লীগের অনেক সংসদ সদস্যের দুর্নীতি তদন্ত করছে, বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘কানাডার আদালত রায় দিয়েছেন যে বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল, তাদের নেতা বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকতে পারে না। বিএনপি নিজেদের দলের কোনো লোকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। আর বিএনপির আমলে দেশে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি।’
জয়নাল হাজারীর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য হওয়ার আলোচনার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারছি না, সভাপতি নির্দেশ দিলে সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর সংবলিত চিঠি যাওয়ার কথা। কিন্তু আমি কোনো চিঠি দেইনি।’
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের চলে যেতে হবে, আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে, ক্রমাগত বাড়ছে। চীন, ভারত থেকে চাপ আসছে। সবদিক থেকে মিয়ানমার সরকার চাপে রয়েছে। আওয়ামী লীগে বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে। যারা বিতর্কিত, যাদের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ আছে তাদের বাদ দিতে হবে। কয়েক এমপিসহ অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। আমরা ফ্রেশ ব্লাড চাই।’
সাধারণ সম্পাদক বলেন, দল করলে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। দু-চারজনের শৃঙ্খলাবিরোধী অপকর্মের জন্য গোটা প্রতিষ্ঠান দায়ী হতে পারে না। এ প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য ত্যাগী নেতাকর্মী রয়েছেন। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে অবশ্যই তাদের নেতৃত্বে থাকার কোনো অধিকার নেই। তিনি বলেন, নেত্রী যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, সেভাবে চলছে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা আওয়ামী লীগ প্রধান উপদেষ্টা আলাউদ্দিন চৌধুরী নাসিম, জেলা কমিটির সভাপতি আবদুর রহমান বিকম, ফেনী পৌরসভা মেয়র হাজী আলাউদ্দিন, জেলা কমিটি নেতা শেখ আবদুল্যা, নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী প্রমুখ।