খবর৭১ঃ ফেনীর আলোচিত মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান হত্যা মামলার রায়ে পুলিশ সদস্যদের ছাড় দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুলের দাবি, এই সরকার পুলিশের ওপর নির্ভরশীল। নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায়ে পুলিশ সদস্যদের ছাড় দেওয়ায় এটা প্রমাণ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিঙ্গাপুর থেকে স্ত্রী রাহাত আরা বেগমকে নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ফখরুল।
নুসরাত হত্যার হত্যার ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগে সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে তিরস্কার করেছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় পর্যবেক্ষণে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ এ কথা বলেন। আদালত বলেন, এ ঘটনায় তৎকালীন ওসি গাফিলতি করেছেন। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কর্মকাণ্ড আর না ঘটে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দেন আদালত।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখানেই প্রমাণিত হচ্ছে যে, এই সরকার পুলিশের ওপর নির্ভরশীল। সেজন্য তারা (সরকার) তাদেরকে এসব কাজ থেকে ছাড় দিয়ে যাচ্ছে। মোট কথা এই সরকার তো নির্বাচিত সরকার নয়, তাদের কোনো ম্যান্ডেট নেই। তারা জোর করে ক্ষমতায় আছে। এ কারণে তারা এই ধরনের দুর্বৃত্তায়ন করছে।
সম্প্রতি দেশে বেশ কিছু ইস্যুর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ফখরুল বলেন, দেশে যখন সংবাদের ঘনঘটা ওই সময়টা আমি মিস করেছি। তবে আমি ট্র্যাকে ছিলাম, খোঁজ-খবর রেখেছি। অবজারভ করেছি। বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যার যে ঘটনা- এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। এটা ক্ষমাহীন একটা অপরাধ। এই অপরাধের পেছনে আমি সম্পূর্ণভাবে সরকারকে দায়ী করবো। ছাত্রলীগ বা যুবলীগ গত কয়েক বছর ধরে একেবারেই লাগামহীন হয়ে গেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে বিষয়টা নিয়ে আবরারকে হত্যা করা হয়েছে-এটা কোনো মতেই কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একজন সাধারণ নাগরিক যে, তার দেশের স্বার্থ সম্পর্কে একটা মতামত দিতে পারবেন না-এটা কখনো চিন্তা করা যায় না। আমরা মনে করি যে, ভারতে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি যে চুক্তিগুলো করেছেন, যেসব এমওইউ সই করেছেন সেখানে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এ কথাগুলো বলতে গিয়ে একজন প্রাণ হারাবে এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি তো মনে করি যে, এজন্যই সরকারের পদত্যাগ করা উচিত ছিল।’
ভোলায় পুলিশ-স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাকে দুঃখজনক ঘটনা বলে দাবি করেন ফখরুল বলেন, ‘আমি বলব যে, এই ধরনের ঘটনাগুলোকে আমার কেন যেন সন্দেহ হয়, নিশ্চিয়ই কোনো না কোনো মহল থেকে এই ধরনের ঘটনাগুলোকে উসকানি দেওয়া হচ্ছে। যারা এই ধরনের লেখা লেখেন আমাদের রসুল (সা.) সম্পর্কে, ধর্ম সম্পর্কে, সাধারণ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করেন এটা নিন্দনীয়। একইসঙ্গে পুলিশ যে গুলি করেছে সেটা আরও বেশি নিন্দনীয়।’
‘এজন্য যে, আমরা দেখলাম ভোলায় কোনো রকমের ভায়োলেন্স ছিল না। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর পুলিশ আক্রমণ করেছে, গোলাগুলি করেছে। এতে প্রমাণিত হয়- ভিন্নমত প্রকাশে কোনো স্বাধীনতা নেই। যেটা আমরা বার বার বলে আসছি।’
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে রাশেদ খান মেননের দেওয়া বক্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মেনন ভাইকে ধন্যবাদ দেই এ কারণে যে, এতোদিন পরে তিনি সত্য কথা বললেন। এরপর সরকারের উচিত অবিলম্বে পদত্যাগ করা।
এদিকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের পরিচালিত শুদ্ধি অভিযানকে আইওয়াশ হিসেবে অভিহিত করেন বিএনপির এ নেতা।
গত ৪ অক্টোবর চিকিৎসার জন্য মির্জা ফখরুল স্ত্রীকে নিয়ে সিঙ্গাপুর যান।