খবর৭১ঃ
‘প্রধানমন্ত্রীর দরজা সব সময় খেলোয়াড়দের জন্য খোলা, তাহলে তারা কেন না জানিয়ে আন্দোলনে গেলেন?’ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে এ প্রশ্ন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি দেখা করতে গেলে তিনি এ প্রশ্ন করেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, ‘ক্রিকেটারদের সব দাবি মেনে নিতে প্রস্তুত বোর্ড।’
এর আগে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেটারদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে ডাকা হয় মাশরাফী বিন মুর্তজাকে। সেখানে মাশরাফীর কাছ থেকে ক্রিকেটের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর মাশরাফীকে ক্রিকেটারদের মাঠে ফেরার বার্তা দিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। বিসিবির সহসভাপতি মাহবুবুল আনামের বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে একটি জাতীয় দৈনিক।
গত ২১ অক্টোবর, সোমবার সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ১১ দফা দাবি পেশ করে ধর্মঘটে যান দেশের দেশের প্রথম সারির ক্রিকেটাররা। সেখানে প্রায় সব পরিচিত মুখের উপস্থিতির মধ্যে ছিলেন না কেবল ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী। যা অনেকের মনেই নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। এদিকে গতকাল বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ধর্মঘট ডেকে ক্রিকেটকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করেন।
এর আগে সোমবার রাতে ফেসবুক পেজে ধর্মঘট বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন মাশরাফী। তিনি লেখেন, ‘অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে, দেশের ক্রিকেটের এমন একটি দিনে আমি কেন উপস্থিত ছিলাম না। আমার মনে হয়, প্রশ্নটি আমাকে না করে, ওদের করাই শ্রেয়। এই উদ্যোগ সম্পর্কে আমি একদমই অবগত ছিলাম না। নিশ্চয়ই বেশ কিছু দিন ধরেই এটি নিয়ে ওদের আলোচনা ছিল, প্রক্রিয়া চলছিল। কিন্তু এ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না।’
সোমবার রাতেই উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত করেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ক্রিকেটারদের দাবি মেনে নেয়ার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি ক্রিকেটারদের মাঠে ফিরিয়ে আনার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণেরও নির্দেশ দেন।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানা গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহদের মাঠে ফেরার তাগিদ দিয়েছেন। এবং বোর্ডের সাথে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে আজ বুধবার মাহবুব আনাম গণমাধ্যমকে জানান, ক্রিকেটারদের ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে বিসিবির সাথে সাকিব, তামিমদের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে এবং একটা অশান্ত পরিস্থিতির উদ্রেক ঘটেছে, তা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেন মাশরাফি। সে সাক্ষাতে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে মাশরাফি কথা বলেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী যে মাশরাফিকে সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন, এমন কথা বলিনি। প্রধানমন্ত্রী ক্রিকেটারদের মাঠে ফেরাতে মাশরাফিকেও ভূমিকা রাখার এবং মধ্যস্থতাকারী হবার কথা বলেন।
আজ দুপুরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিরসনের কিছুটা একটা আভাস মিলেছে। বিসিবি সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন জানিয়েছেন, তার সাথে আন্দোলনকারী ক্রিকেটারদের মধ্যে সিনিয়র সদস্য তামিম ইকবালের কথা হয়েছে। তামিম তাকে জানিয়েছেন, তারা নিজেরা কথা বলে আজ বুধবার বিকেল ৫ টার মধ্যে বোর্ডকে জানাবেন।
তামিমের কথায় পরিষ্কার ইঙ্গিত, ক্রিকেটাররা আজ দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে রাজধানীর কোথাও একত্রিত হবেন। নিজেরা কথাবার্তা বলে হয়তো বিসিবি কর্তাদের সাথে বসার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। যদি সেটা হয়, তাহলে আজই ক্রিকেট আকাশে হঠাৎ জমা মেঘ কেটে যেতে পারে।