খবর৭১ঃ
বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না যুবলীগের। বর্তমানে সারাদেশে আলোচিত খবর যুবলীগের নেতাদের অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্য। ফুটপাত থেকে রাজপথ, টংদোকান থেকে সংসদ সব যায়গায় এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ঢাকায় অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা। এই ক্যাসিনো আলোচনায় যেন নতুন এক মাত্রা যোগ হলো ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের কোটি টাকার পদ বাণিজ্য। ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগে সাম্প্রতি দুটি পদ ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগে একটি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও একটি সাংগঠনিক সম্পাদক পদ কোটি টাকার বেশিতে বিক্রি করা হয়েছে। এর মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক পদটি দেওয়া হয়েছে চলতি মাসের ২০ তারিখে। এবং যুগ্ম -সাধারণ সম্পাদক পদটি কয়েকমাস আগে দেওয়া হয়েছে।
তারেকুজ্জামান রাজীবকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের চিঠি দেওয়া হয়েছে মাস দুই আগে। তারেকুজ্জামান রাজীব বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ নম্বর ওর্য়াড কাউন্সিলর।
গেল ২০ তারিখে সাংগঠনিক সম্পাদকের চিঠি দেওয়া হয় তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পীকে। বাপ্পী পল্লবীতে বসবাস করেন। এলাকায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। এরমধ্যে পল্লবীর পলাশ নগর, বাউনিয়াবাধ, ঝুটপট্টি, বিহারি ক্যাম্প, পল্লবী থানা রোড, মিরপুর ১২, টেকের বাড়ী, সাগুপ্তা মোড় ও রূপনগর থানাধীন দুয়ারীপাড়া, শিয়াল বাড়ি, মিরপুর ৭ নম্বর, মিরপুর ৬ নম্বর, হাউজং এলাকায় নিজের দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি অন্যতম। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তারেকুজ্জামান রাজীব ও তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পীর যথাক্রমে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদ দুটি ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমানের মাধ্যমে এই টাকার লেনদেন হয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। হঠাৎ করে মহানগর যুবলীগে এই পদ দুটো দেওয়ার পর তৃণমূলের কর্মীদের মাঝে একপ্রকার ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে মহানগর উত্তর যুবলীগের এক সহ-সম্পাদক কে বলেন, যুবলীগের শূণ্য পদে দলের পরিশ্রমী কর্মীদের মূল্যায়িত করতেই পারে। কিন্তু হঠাৎ করে দলের ওয়াকিং কমিটি মিটিং ছাড়া দুজন অপরিপক্ব কর্মীকে ধরে এনে কেন্দ্রের নির্দেশে এমনভাবে পদায়ন করা সত্যিই দুঃখজনক। এতে সংগঠনে স্বেচ্ছাচারি মনোভাব প্রকাশ পায়।
তিনি আরো বলেন, যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিস যুবলীগকে একটা লিমিটেড কম্পানিতে পরিণত করেছেন। টাকা ছাড়া ওয়ার্ডের একটা সাধারণ সম্পাদক পদও তিনি কাউকে পেতে দেননা। বলতে গেলে তিনিই যুবলীগের অঘোষিত চেয়ারম্যান।
মহানগর যুবলীগের আরেক কর্মী বলেন, আমরা আজ এক যুগের বেশি দলের পেছনে পরিশ্রম করেও মহানগরে একটা সদস্য পদ পাই না। অথচ দুদিন পরিশ্রম না করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো বাগিয়ে নেয়। তবে কি আমাদের যাদের টাকা নেই তারা যুবলীগের রাজনীতি করতে পারবো না?
তিনি আরো বলেন, দুদিন আগে নেত্রী যুবলীগের এইসব নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এমনকি উত্তর-দক্ষিণের শীর্ষ চার যুবলীগ নেতার গণভবনে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু তারা এই সময়ে এসে এমন বিতর্কিত লোকদের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে টাকার বিনিময়ে পদ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক দুজনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের ফোনে পাওয়া যায়নি।