সন্ত্রাস রুখে দেওয়ার শপথ বুয়েটে

0
507
সন্ত্রাস রুখে দেওয়ার শপথ বুয়েটে
ছবিঃ সংগৃহীত

খবর৭১ঃ

সব ধরনের সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রুখে দেওয়ার শপথ নিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার বেলা সোয়া ১টার দিকে বুয়েট মিলনায়তনে এই শপথ অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বুয়েটের উপাচার্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও হলের প্রভোস্টরা শপথ নেন। তবে শিক্ষকেরা মিলনায়তনে উপস্থিত থাকলেও শপথে অংশ নেননি।

শপথ নেওয়ার জন্য বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা মিলনায়তনে জড়ো হতে থাকেন। বেলা সোয়া ১টার দিকে শপথ অনুষ্ঠান হয়।

শপথ শুরুর আগে বুয়েটের নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর শপথ পড়ান বুয়েটের ১৭ তম ব্যাচের ছাত্রী রাফিয়া রিজওয়ানা। শপথে বলা হয়, তাঁরা নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান সম্মিলিতভাবে রুখে দেবেন। এ ছাড়াও নৈতিকতার সঙ্গে ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার তাঁরা সমূলে উৎপাটিত করবেন।

শপথে বলা হয়, বুয়েটের আঙিনায় আর যেন নিষ্পাপ কোনো প্রাণ ঝরে না যায়, আর যাতে কেউ অত্যাচারিত না হন, সেটা সবাই মিলে নিশ্চিত করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় শিক্ষার্থীদের জ্ঞাতসারে হওয়া প্রতিটি অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সবাই সর্বদা সোচ্চার থাকবেন। এই মুহূর্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কল্যাণ ও নিরাপত্তার জন্য তাঁদের ওপর অর্পিত নৈতিক, মানবিকসহ সব প্রকার দায়িত্ব সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁদের এই কর্মসূচিটি বাইরে হওয়ার কথা ঝিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার আশঙ্কায় পরে তা মিলনায়তনে করার সিদ্ধান্ত হয়।

গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। এরপর থেকেই আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। ভর্তি পরীক্ষার কারণে ১৩ ও ১৪ অক্টোবর আন্দোলন শিথিল থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার বুয়েট ক্যাম্পাসে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি শিথিলের পর অবশ্য গতকাল কোনো মিছিল-সমাবেশ হয়নি। বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে দাবি বাস্তবায়ন পরিস্থিতি ও আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা তিনটার দিকে বুয়েটের ভারপ্রাপ্ত ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল বাসিতের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। পরে আবারও নিজেদের মধ্যে আলোচনা শেষে বুয়েট শহীদ মিনারে নিজেদের অবস্থান জানান শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের ধরনে তাঁরা পরিবর্তন আনেন। তাঁরা জানান, দিনভর স্লোগান-বিক্ষোভের মতো মাঠের প্রতিবাদী কর্মসূচিতে আপাতত আর যাচ্ছেন না তাঁরা। তবে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে যাঁদের নাম আসবে, তাঁদের সবাইকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার না করা পর্যন্ত কোনো ধরনের একাডেমিক (ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম) কার্যক্রমে অংশ নেবেন না আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মাঠের আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটবে গণশপথ কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here