খবর৭১ঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর লোমহর্ষক সব নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরেছেন। ‘ইউরিপোর্টার’ নামে বুয়েটের একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ করছেন চরম নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা।
একজন সাবেক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাকে বস্তাবন্দি করে কীভাবে ভয়ংকর নির্যাতন করা হয়েছিল। তার অভিযোগ, ২০০৬ নম্বর রুমে তাকে ডেকে নিয়ে যায় ১২ ব্যাচের জাওয়াদ। তার কোনো ধারণাই ছিল না তাকে কেন ডাকা হয়েছে। সেখানে নবম ব্যাচের শুভ্র টিকাদার, সিয়াম, শুভম, দশম ব্যাচের কনক, রাসেল আর ১১তম ব্যাচের তানভীর রায়হান (টি আর নামে কুখ্যাত) তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
ঐ শিক্ষার্থীর ভাষ্য, ‘কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আজগুবিভাবে আমি শিবির করি এটা প্রমাণ করার জন্য আমাকে টর্চার করে। প্রথমে তানভীর আমাকে গালে প্রচণ্ড থাপ্পড় মারে। আমার মাথা ঘুরে যায়। ঠোঁট কেটে যায়। এটা ওদের টেকনিক। আচমকা আঘাত করে টর্চারের মুড ক্রিয়েট করে। এরপর তানভীর আমার বুকে প্রচণ্ড এক লাথি মারে। আমি মেঝেতে পড়ে যাই। কেউ এসে তোলে আমাকে। এরপর আমাকে জোর করে স্বীকার করতে বলে যে আমি শিবির করি। স্বীকার না করলে আমার মাথায় একটা বস্তা পরিয়ে দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর শুধু মুহুর্মুহু রডের বাড়ি পড়তে লাগল পিঠের ওপরে। একজন মনে হয় টায়ার্ড হয়ে রডটা রাখতেই আরেকজন রড হাতে তুলে নেয়। এভাবে থেমে থেমে প্রায় এক ঘণ্টা বস্তাবন্দি হয়ে মার খেয়েছিলাম।’
এনামুল হক নামে বুয়েটের সাবেক এক শিক্ষার্থী নিজের ফেরিভাইড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের ওপর চালানো নির্মম নির্যাতনের কথা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে পোস্টে জুড়ে দিয়েছেন সেদিনের নির্মম নির্যাতনের দুটি ছবিও। যেখানে দেখা গেছে, নির্যাতনের কারণে পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের নানা চিহ্ন। এনামুল হক বলেছেন, এসব মারের দাগ আবরারের নয়; এগুলো তার শরীরেরই ছবি। আবরার মারা গেলেও সেবার ছাত্রলীগ কর্মীর নির্যাতনের পরও প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন তিনি