খবর৭১ঃ রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ। ৪ লাখ ৪১ হাজার ২২৪ জন ভোটার ১৭৫টি কেন্দ্রে ইভিএমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আসন হিসেবে পরিচিত রংপুর সদর এ আসনে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এই ৬ জনের ৪ জনই বহিরাগত। এই ৪ প্রার্থী আজ ভোট পর্যন্ত দিতে পারবেন না। এরা হলেন : জাতীয় পার্টির প্রার্থী রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ (লাঙ্গল), বিএনপির রিটা রহমান (ধানের শীষ), গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুল্লাহ বায়েজিদ (মাছ) ও এনপিপির শফিউল আলম (আম)।
বাকি দুই প্রার্থী হচ্ছেন : হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ (মোটরগাড়ি) ও খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল (দেয়ালঘড়ি)। আজকের নির্বাচনে আসিফের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে রিটা রহমানের।
আসনটি লাঙ্গলের হলেও প্রচারে এগিয়ে আছেন জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান এরশাদের ভাতিজা মোটরগাড়ির হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ।
সূত্র জানায়, উপনির্বাচনের প্রচারে লাঙ্গলের পক্ষে স্থানীয় জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী নেতাদের অনেককেই দেখা যায়নি মাঠে। জাতীয় পার্টির স্থানীয় দু’জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসিরসহ অনেকেই লাঙ্গলের প্রচারে অনুপস্থিত ছিলেন।
কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ রাজ্জাক বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, তবে জেলা ও মহানগরের সব নেতা নিষ্ক্রিয় নয়, অনেকে কাজ করছেন।
জেলা কমিটির সভাপতি ফকরুজ্জামান জাহাঙ্গীরকেও ভোটের মাঠে সেভাবে দেখা যায়নি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশেষ বিশেষ সময়ে নির্বাচনী প্রচারে ছিলাম।
মোস্তাফিজার রহমান বলেন, আমি দেশের বাইরে আছি আর এমএম ইয়াসির বলেন, পারিবারিক কাজে দীর্ঘদিন রংপুরের বাইরে আছি। এসবই লাঙ্গলের বিপক্ষে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মোটরগাড়ির প্রার্থী আসিফ ছাড়াও স্থানীয় ভোটার হিসেবে আজ ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন খেলাফত মজলিসের প্রার্থী তৌহিদুর রহমান মণ্ডল। আসিফ ভোট দেবেন শিশুমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে এবং তৌহিদুর রহমান ভোট দেবেন রংপুর মডেল কলেজ কেন্দ্রে।
তবে এনপিপির শফিউল আলম নিজেকে স্থানীয় ভোটার হিসেবে দাবি করেছেন। বলেছেন, আমি নগরীর মুন্সিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেব।
তবে হলফনামা অনুসারে তার স্থায়ী ঠিকানা রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়। রিটার্নিং অফিসার জিএম সাহাতাব উদ্দিন বলেছেন, সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি ভোটাররা নির্বিঘ্নেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
শুক্রবার বিকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন নির্বাচন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ভোট কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম মেশিনসহ প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়েছে।
১৭৫টি কেন্দ্রের ১ হাজার ২৩টি কক্ষে বিরতিহীনভাবে ভোট হবে। সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য ১৭৫ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ১ হাজার ২৩ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ২ হাজার ৪৬ জন পোলিং অফিসারকে নিয়োজিত করা হয়েছে।
বিকালে র্যাব-১৩-এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস প্রেস ক্লাবের সামনে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে আসা এবং ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করতে র্যাব কাজ করেছে। নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হলে তা কঠোরভাবে মোকাবেলা করা হবে। এ জন্য র্যাবের ২০টি টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
নিরাপত্তা নিয়ে জানতে চাইলে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
ভোটের আগের দিন থেকে ভোটের পরদিন পর্যন্ত নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সাড়ে ৩ হাজার আনসার-পুলিশ ছাড়াও ১৮ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ২০টি মোবাইল টিম, ২০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং ৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গত ১৪ জুলাই জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের মৃত্যুর পর ১৬ জুলাই আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়