খবর৭১ঃ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেশের অবস্থা নিয়ে সবাই গভীর উদ্বিগ্ন। এ সরকারকে আমরা কেউ ভোট দিইনি। সরকার দেশের শাসনব্যবস্থা ষোলআনাই নষ্ট করে দিয়েছে। তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা তাদের প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য। এনিয়ে কারোই দ্বিমত নেই।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঐক্যফ্রন্ট শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) আয়োজিত ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জাতীয় সরকারের অপরিহার্যতা’শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
ক্যাসিনো-জুয়া নিয়ে বিএনপিকে দোষারোপ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে ড. কামাল বলেন, ১০ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে যা করেছে, সেইসবের ক্রেডিটও তারা বিএনপিকে দিতে চায়। আমি তো বিএনপির সমর্থক ছিলাম না। আমিও তাদের সমালোচনা করেছি। বিএনপি অনেক কিছুই করতে পারে, কিন্তু দশ বছর তারা ক্ষমতায় নেই। এই সময়ে যা হয়েছে, সেসবও বিএনপি করেছে- এমন অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি আরও বলেন, দেশকে বাঁচাতে হবে। দুর্নীতি কোন জায়গায় চলে গেছে? অর্থনীতি কীভাবে ধ্বংস হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের কী পরিমাণ ঊর্ধ্বগতি; বিশেষ করে ব্যাংকিং সিস্টেমকে যেখানে নিয়ে আসা হয়েছে- এসব নিয়ে বেশিকিছু বলতে চাই না। এতে আরও ক্ষতি হবে।
পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে ড. কামাল বলেন, এই যে রেকর্ড পরিমাণ টাকা বাইরে যাচ্ছে, কারা পাঠাচ্ছে? যাদের দেশপ্রেম থাকবে, দেশের প্রতি আস্থা থাকবে, তারা তো এভাবে বিদেশে টাকা পাঠাবে না। এগুলো তদন্ত হওয়া দরকার। সরকারের যদি অনুমতি না থাকে, তাহলে মানুষ এভাবে বাইরে টাকা পাঠাতে পারে না। এই লোকগুলো হাতেগোনা।
আলোচনা সভায় জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার কৌশল অবলম্বন করে সরকার দেশের বিদ্যমান সাংবিধানিক-গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে উচ্ছেদ করে দিয়েছে। প্রজাতন্ত্রের জনগণকে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণের সাংবিধানিক ভিত্তি থেকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে-প্রজাতন্ত্র থেকে ভোটাধিকার হরণ করে জনগণকে ক্রীতদাসে পরিণত করা হয়েছে। ধ্বংসপ্রাপ্ত শাসন-প্রশাসন ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার, সাংবিধানিক-গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা পুর্নবহাল ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা দেওয়ার প্রয়োজনে জাতীয় সরকার অপরিহার্য।
জেএসডির যুগ্ম-সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ।