পাক-ভারত পরমাণু যুদ্ধ সাড়ে ১২ কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু হবে

0
460
পাক-ভারত পরমাণু যুদ্ধ সাড়ে ১২ কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু হবে

খবর৭১ঃ পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে সাড়ে ১২ কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু হবে। পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের ফলে তৈরি হওয়া কালো কার্বন ভেদ করে সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারবে না।ফলে শস্যও হবে না। এতে বিশ্বজুড়ে গণঅনাহারে মৃত্যু হবে কোটি কোটি মানুষের।

বুধবার আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় এ সতর্ক বার্তা দিয়েছে।

সায়েন্স অ্যাডভান্সেসের অন্যতম গবেষক নিউ ব্রান্সউইকের অ্যালান রোবক বলেছেন, ২০২৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে তার জেরে ক্ষয়ক্ষতিটা শুধুই যে এলাকায় বোমা পড়ল, সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, তার খেসারত দিতে হবে পুরো বিশ্বকেই।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে। যুদ্ধে ৫ কোটি থেকে সাড়ে ১২ কোটি মানুষ মারা যাবে। যদি ভারত ১০০টি কৌশলগত বোমা শহরের কেন্দ্রে পৌঁছাতে সক্ষম হয় তাহলে পাকিস্তান ১৫০টি ব্যবহারে সক্ষম হবে।

২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারতের ১৪০টি ও পাকিস্তানের ১৫০টি পরমাণুবাহী ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। কিন্তু ২০২৫ সালে এটি যথাক্রমে ২০০ থেকে ২৫০-এ পৌঁছাবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সমগ্র ভারতে পৌঁছাতে সক্ষম। ভারতের ৪০০ শহরে কোটি কোটি মানুষের বসবাস। পাকিস্তান তার বর্তমান ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বৃহৎ শহরগুলোর এক-তৃতীয়াংশের চেয়ে কিছুটা বেশি আক্রমণ করতে পারে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি।

ভারতের চেয়ে পাকিস্তানের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র বেশি থাকায় দিল্লিকেই এর ফল ভুগতে হবে।

গবেষকদের মতে, দু’পক্ষের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে, পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের ফলে ১ কোটি ৬০ লাখ থেকে ৩ কোটি লাখ টন ওজনের কালো কার্বনের কালিতে ঢেকে যাবে আকাশ। যা বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে পৌঁছাতে সময় নেবে বড়জোর কয়েক সপ্তাহ।

এর ফলে, পৃথিবীর বিশাল একটি অংশে সূর্যের আলো পৌঁছাবে না। কারণ, ওই কালো কার্বনের কালির পুরুস্তর সূর্যের আলোর পুরোটাই শুষে নেবে। তার ফলে, জমাট কালো মেঘের পরিমাণ বাড়বে দ্রুত।

গবেষণায় বলা হয়েছে, এতে সূর্যের ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ আলো কম পৌঁছাবে পৃথিবীতে। ফলে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা কমে যাবে ২ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কমে যাবে অন্তত ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ।

তার প্রভাব পড়বে ফসল উৎপাদনের ওপর। মহাসাগরে যে গাছপালা জন্মায়, তাদের ওপরেও।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে জমির ওপর যে ফসল ফলে, তার পরিমাণ কমে যাবে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ। আর মহাসাগরগুলোতে জন্মানো উদ্ভিদের উৎপাদন কমবে ৫ থেকে ১৫ শতাংশ।

সেই যুদ্ধে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের ফলে বায়ুমণ্ডলে যে ঝুল ও কালির মেঘ জমবে, তা কেটে যেতে সময় লাগবে অন্তত ১০ বছর। সময়টা আরও বেশি লাগতে পারে, সেই মেঘ বায়ুমণ্ডলের আরও ওপরের স্তরে উঠে যাবে বলে।

কতটা শক্তির পরমাণু বোমা সেই যুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে, তারও একটা হিসাব দিয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেলা পরমাণু বোমার শক্তি যতটা ছিল, সেই ১৫ কিলোটন ওজনের বোমা ফেলতে পারে দু’পক্ষই। আবার সেই পরমাণু বোমাগুলোর ওজন হতে পারে কয়েকশ’ কিলোটনও।

ভারত সরকার ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার পরই দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here