খবর৭১ঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী সুখবর নিয়ে আসবেন, আমরা এটাই আশা করি।’ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ-বিএসপিপি আয়োজিত পেশাজীবী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারতে গেছেন। আমরা সবসময় যেমন আশা করে থাকি, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের এই সরকারের নাকি পর্বতের শৃঙ্গের মতো সম্পর্ক। কিন্তু বারবার আমরা হতাশ হই। তিনি যতবার ভারত যান, ততবার কেবল দিয়ে আসেন। তিনি ফিরে আসলে দেখি আমাদের যে মূল সমস্যাগুলো রয়েছে- সেগুলো সমস্যার সমাধান হয় না। কিন্তু আমরা দিয়ে আসি একেবারে উজাড় করে। প্রধানমন্ত্রী যতবার ভারত গেছেন, প্রতিবারই হতাশ হয়েছি। আমাদের সীমান্তে হত্যার সমস্যার সমাধান হয় না, পানি বণ্টন নিয়ে যে সমস্যার সমাধান হয় না, বাণিজ্যের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা হয়েছে-সেটার সমাধান হয় না।ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়া হয় আমরা বন্যায় ডুবে যাই সেই সমস্যার সমাধান হয় না। আজকে জনগণ আশা করবে জনগণের যে প্রত্যাশা তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বাংলাদেশ পাবে। সে বিষয়ে অবশ্যই একটা সুখবর বাংলাদেশে আপনি নিয়ে আসবেন আমরা অবশ্যই সেটা আশা করি। আমরা আশা করব আমাদের সীমান্তে হত্যা যেন বন্ধ হয়ে যাবে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া কারো অনুকম্পায় মুক্ত হবেন না। তিনি অবশ্যই তার ন্যায্য অধিকার, তার যে জামিন পাওয়ার হক, সেই অধিকারেই তিনি মুক্ত হবেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা যাবে না। জনগণ তাদের প্রিয় নেত্রীকে অবশ্যই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বের করে আনবে ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, আজকে ক্যাসিনো নিয়ে খুব লাফালাফি হচ্ছে। ক্যাসিনো -লুটপাট হচ্ছে। তারচেয়ে অনেক বড় সম্পদ ভোটের অধিকার,গণতন্ত্রের অধিকার, আমাদের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার সব লুট হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের সম্পদ লুট হয়ে গেছে এবং লুট করেছে এই আওয়ামী লীগ সরকার।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের এমপি, মন্ত্রী এবং নেতারা যখন বলেন আসাম থেকে, ত্রিপুরা থেকে তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে তখন স্বাভাবিকভাবেই আমরা দেশের নাগরিক হিসেবে উদ্বিগ্ন হই। এটা একটা ষড়যন্ত্রের কথা, এটা একটা চক্রান্তের কথা যা দিয়ে বাংলাদেশের উপর আরও একটা বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করা যেতে পারে। এমনিতেই রোহিঙ্গা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান এই সরকার করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গা কেউ তারা ফেরত পাঠাতে পারেনি।মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছেন। এটাই তাদের ইতিহাস তাদের চরিত্রের মধ্যে গণতন্ত্র বলতে কোন কিছু নেই। তাদের একটাই আছে একনায়কতন্ত্র ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করা,এক দলের শাসন ব্যবস্থা করা। সংবিধানকে লঙ্ঘন করে তারা ভিন্ন আঙ্গিকে ভিন্ন ভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে।’
সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে পেশাজীবী সমাবেশে আরও বক্তব্যে রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয়তাবাদী সংস্কৃতি জোটের মহাসচিব এম আমিনুল হক প্রমুখ।