নড়িয়ায় ভাঙন আতঙ্ক

0
582
নড়িয়ায় ভাঙন আতঙ্ক
ছবিঃ সংগৃহীত

খবর৭১ঃ শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মার ডান তীর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের ভাঙন এখনো থামেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে। পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম ভাঙন এলাকায় থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রম মনিটর করছেন।

এদিকে এখনো ভাঙছে বসত ভিটা। আতঙ্কিত এলাকাবাসী বাড়ি-ঘর ভেঙে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার কথা বলা হলেও ভুক্তভোগীরা অনেকই সরকারি সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গেল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধের ২শ মিটার এলাকা হঠাৎ ধসে যায়। এতে কিছু বুঝে উঠার আগেই একটি মসজিদ, ২টি পাকা ভবন ও ১০টি বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়। ভাঙন রোধে কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কোন ভাবেই থামছে না ভাঙন। থেমে থেমে এখনো ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। আতঙ্ককে আশপাশের বাসিন্দারা বাড়ি ঘর রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। জীবনের শেষে আশ্রয় টুকু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী সিরাজ দেওয়ানের স্ত্রী রানি বেগম জানান, আমরা নদী ভাঙার পর অনেক কষ্ট করে এ জমিটুকু কিনে এখানে আশ্রয় বসতি গড়ে ছিলাম। কিন্তু তাও ভাগ্যে হলো না। এখন কোথায় যাব। কিভাবে বাঁচবো। এসব বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

নড়িয়ায় ভাঙন আতঙ্ক
ছবিঃ সংগৃহীত

ভুক্তভোগী মানজুমা বেগম কান্না করতে করতে বলেন, চার পাঁচ ভাঙার পর এখানে বাড়ি করেছিলাম। তাও এখন নদী নিয়ে যাচ্ছে। এখন শরীরে শক্তিও নেই। কাজও করতে পারি না। আমাদের আর বাঁচার আশা নাই। যদি কেউ সাহায্য করে তাহলে বাঁচতে পারবো। রাস্তা ছাড়া কোথায় উঠবো। ঘর ভেঙে রাখার যায়গাও নাই।

এদিকে, স্থানীয় মুলফৎগঞ্জ মাদ্রাসায় ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য বিশেষ মুনাজাতের আয়োজন করা হয়। মুনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের ভারপ্রাপ্ত খতিব মাওলানা মিজানুর রহমান। মুনাজাতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, শরীয়তপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবার হোসেন অপু, বাহাদুরপুরের পীর মাওলানা আব্দুল্লাহ হাসান অংশ নেন।

উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ভাঙন এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ভাঙন রোধের সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আজ একটি জাহাজের মাধ্যমে ব্লক ফেলা হচ্ছে। বিকেলের মধ্যে আরও দুইটি জাহাজ ব্লক ফেলার কাজে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। আমরা ভাঙন রোধ না হওয়া পর্যন্ত অসহায় ভাঙন কবলিত মানুষে পাশে থাকবো।

উল্লেখ্য, গত বছর নড়িয়ার আট কিলোমিটার জুড়ে ব্যাপক ভাঙন ছিল। ভাঙনে ওই এলাকার সাড়ে ছয় হাজার পরিবার গৃহহীন হয়। নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অসংখ্য স্থাপনা বিলিন হয়ে যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here