মোঃ রাসেল, মুরাদনগর(কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগরে চোর সন্দেহে তিন কিশোরকে চারদিন আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে ইউপি সদস্যসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার কামাল্লা ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে কামাল্লা গ্রামের মৃত সহিদ মিয়ার ছেলে ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন ও গফুর চৌধূরীর ছেলে দরবেশ চৌধূরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। নির্যাতনের শিকার ৩ কিশোর জেলার হোমনা উপজেলার ওপারচর গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে আমানউল্লাহ (১৪), আনোরুলের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (১২) ও ওমর ফারুকের ছেলে আসাদউল্লাহ (১১)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কামাল্লা গ্রামে চৌধূরীর জামে মসজিদের সামনে পুড়নো প্লাস্টিকের বোতল টুকানো অবস্থায় ওই তিন কিশোরকে চোর সন্দেহে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ খাঁনের নেতৃত্বে ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন ও দরবেশ চৌধূরীসহ কয়েকজন লোক তাদের বেধরক মারধর করে নান্টু ঠাকুরের বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানেও তাদের দ্বিতীয় দফায় মারধর করে। পরে সন্ধ্যায় তাদেরকে কামাল্লা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ২য় তলার একটি রুমে আটকে রাখেন। ঘটনাস্থল থেকে কিশোর আমানউল্লার মা আছমা বেগমকে ফোন করে আসতে বলা হয়। খবর পেয়ে আছমা বেগম চেয়ারম্যানের সাথে দেখা করেন। এসময় চুরির সন্দেহে আছমা বেগমের কাছ থেকে জরিমানা বাবদ ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন চেয়ারম্যান ফিরোজ খাঁন।
আছমা বেগম তার দারিদ্রতার কথা বলে তিন কিশোরকে খাবার খাওয়ানের জন্য ২ হাজার টাকা দিয়ে যান। আর বলে যান যে, তাদেরকে প্রয়োজনে আইনের হাতে তুলে দিন কিন্তু আমি কোন টাকা দিতে পারবো না। এই কথা বলে আছমা বেগম ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। জরিমানার টাকা না পেয়ে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন ২ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই তিন কিশোরকে খাবার না দিয়ে তাদের উল্টো মারধর করে আটকে রাখে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে খবর পেয়ে মুরাদনগর থানার এসআই মোঃ নাজমুল আলমসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তিন কিশোরকে উদ্ধার করে। পরে আছমা বেগম বাদী হয়ে ওই দিন রাতেই ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ খাঁন, ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিনসহ ৪ জনের নাম উল্ল্যেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মনজুর আলম বলেন, এ ঘটনায় ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন ও দরবেশ চৌধূরীকে গ্রেপ্তার করে বুধবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।