রোহিঙ্গাসহ ক্ষতিগ্রস্তদের যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার কোটি টাকার সহায়তা

0
522
রোহিঙ্গাসহ ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়কে যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার কোটি টাকার সহায়তা

খবর৭১ঃ
রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশে তাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ও ক্ষতিগ্রস্ত অন্য জনগোষ্ঠীর জন্য ১ হাজার ৬৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার বেশি নতুন মানবিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার নিউইয়র্কে এই সহায়তার ঘোষণা দেয় দেশটি। একই দিন বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এই অর্থ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৯ লাখেরও বেশি শরণার্থীর একটি অংশের পাশাপাশি বাংলাদেশে তাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জরুরি চাহিদা মেটাতে সহায়তা করবে। বাস্তুচ্যুত শরণার্থীদের মধ্যে অনেকেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা রোহিঙ্গা নারী ও শিশু। এই তহবিল রোহিঙ্গা ও মিয়ানমার অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের সদস্যসহ সেদেশে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকজনকে জীবনরক্ষাকারী সহায়তা দেবে। এদের মধ্যে রয়েছে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী এবং ‘আরাকান আর্মি’র মধ্যে লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ।

ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমার ও বাংলাদেশের এই সংকট মোকাবেলায় মানবিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ হিসেবে এখনো শীর্ষস্থানে রয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্টে সহিংসতার সূত্রপাত হওয়ার পর থেকে দেশটি এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৬১৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার বেশি সহায়তা করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই সংকট মোকাবেলার বিপুল আর্থিক দায়ভার একা নিতে পারবে না। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কিছুসংখ্যক জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র এই মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে যে অর্থ দিয়েছে আমরা তাকে স্বাগত জানাই। অন্যান্য দেশ ও অংশীজনদেরও একইভাবে সাড়া দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মানবিক সঙ্কটে সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের উদারতার প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কাছে সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টারও প্রশংসা করে দেশটি। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এত উদারভাবে আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর জন্য অব্যাহত মানবিক ও উন্নয়ন সহায়তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছে বলেও জানানো হয়।

এ সময় জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষদের সচেতন সম্মতির ভিত্তিতে স্বেচ্ছামূলক, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো অব্যাহত রাখার কথাও জানায় যুক্তরাষ্ট্র। তারা জানায়, আমরা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিক্ষাদানের জন্য মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম ব্যবহারের সুবিধার্থে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মিয়ানমার সরকারকে উৎসাহিত করছি। এটি মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া রোহিঙ্গা তরুণদের আবার মিয়ানমারের সমাজের অন্তর্ভুক্ত হতে সহায়তা করবে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ সহায়তা দিয়ে চলমান সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য সুরক্ষা, জরুরি আশ্রয়, খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, মনো-সামাজিক সহায়তা, শিক্ষা, পানীয় জল, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ বিভিন্ন কাজ করা হয়। এই তহবিলের মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য দুর্যোগ মোকাবেলা প্রস্তুতির উন্নতি এবং শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করার কর্মসূচিও অন্তর্ভুক্ত। এসব কর্মসূচি শরণার্থী শিবিরগুলিতে অস্থিতিশীলতা রোধ এবং উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হলে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here