খবর৭১ঃ দুইবার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ব্যর্থ হওয়ায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে স্থায়ী বসবাসের স্বপ্ন দেখছে। এক শ্রেণির অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রোহিঙ্গাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ রোহিঙ্গারা। শিকার হচ্ছেন মারপিট ও চাঁদাবাজির। একাধিক রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে চাইলেও ভয়ে তারা মুখ খুলতে পারছেন না।
রোহিঙ্গা ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সেক্রেটারি মো. নুর জানান, ২০১২ সালে যেসব রোহিঙ্গা এসেছিলেন তারা ছিলেন সহজসরল। তারা দুর্নাম হয় এমন কাজ করেনি। তবে বর্তমানে যে সমস্ত রোহিঙ্গা এসেছেন তাদের অধিকাংশ সন্ত্রাসী ও নানা অপকর্মে লিপ্ত।
কুতুপালং ২৬নং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শামসুল আলম, নিয়ামত আলী ও আবু সিদ্দিক এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, অনেক রোহিঙ্গা আছেন যারা স্বদেশে ফিরতে আগ্রহী। কিন্তু কিছু সংখ্যক অস্ত্রধারী, দুর্বৃত্ত রোহিঙ্গাদের ভয়ে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কেউ যাওয়ার জন্য মুখ খুলতে পারছে না।
বালুখালী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা রাকিম মিয়া, এরশাদুল হক ও ছমির উল্যাহ জানান, তারা ক্যাম্পের উচ্ছৃঙ্খল ও হিংসাত্মক পরিবেশ দেখে স্বদেশে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই রাতেই তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভিন্ন এক অজুহাত তুলে তাদের ব্যাপক মারধর করা হয়। এমনকি তাদের থানায় অভিযোগ পর্যন্ত করতে দেয়নি।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নুর মোহ্ম্মাদ সিকদার রোহিঙ্গা বলেন, যেহেতু রোহিঙ্গারা অশিক্ষিত, তাছাড়া তারা দীর্ঘ দিন রাখাইনদের সঙ্গে জীবন অতিবাহিত করেছেন। তাই তাদের চিন্তা-চেতনার সঙ্গে স্থানীয়দের কোনোদিন মিল হতে পারে না। তারা কথায় কথায় মারামারি ও হিংসাত্মক ঘটনায় লিপ্ত হতে দ্বিধা করে না। তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তাতে সহজেই তার দেশে ফিরতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনা ও উগ্রপন্থী রাখাইন জনগোষ্ঠীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে ২০১২ সালে প্রায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নাফ নদী পার হয়ে কুতুপালং বনভূমিতে আশ্রয় নেয়।