খবর৭১ঃ
চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে উইকেটে স্পিন ধরছে। সেই সুবিধাটা নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম ও সাকিব আল হাসান। নিয়মিত বিরতিতে আফগানিস্তানের উইকেট তুলে নিয়েছেন তারা। এতে প্রথম ইনিংসে ৩৪২ রানে অলআউট হয়েছেন আফগানরা। তবে এর আগে দলীয় রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন তারা। ক্রিকেটের দীর্ঘ পরিসরে এক ইনিংসে এটিই এখন তাদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
এতদিন টেস্ট ইতিহাসে আফগানিস্তানের দলীয় সর্বোচ্চ রান ছিল ৩১৪ রান। চলতি বছরের মার্চে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দেরাদুন টেস্টে এই রান করে তারা। এবার নিজেদের দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেলেন সফরকারীরা।
এতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন রশিদ খান। এদিন কাবুলিওয়ালারা ধারাবাহিক বিরতিতে উইকেট হারালেও ক্রিজে এসে ঝড় তোলেন তিনি। শেষদিকে খেলেন ৬১ বলে ৩ ছক্কার বিপরীতে ২ চারে ৫১ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। শেষ পর্যন্ত দর্শনীয় এক ফিল্ডিংয়ে তাকে কট অ্যান্ড বোল্ড করে আফগান ইনিংসের যবনিকা টানেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
শুক্রবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৫ উইকেটে ২৭১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনে খেলতে নামে আফগানিস্তান। ৮৮ রান নিয়ে আসগর আফগান এবং ৩৫ রান নিয়ে আফসার জাজাই দিনের খেলা শুরু করেন।
তবে শুরুটা ভালো করতে পারেননি তারা। ব্যক্তিগত স্কোরে আর ৪ রান করেই ফেরেন সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় থাকা আসগর। মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করে আসগরকে ফেরান তাইজুল। ফেরার আগে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৯২ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন অভিজ্ঞ ব্যাটার। সেঞ্চুরিবঞ্চিত করে তার বিষদাঁত ভেঙে দেন বাংলাদেশ বিষেশজ্ঞ স্পিনার। এতে ভাঙে ৮১ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি।
সঙ্গী হারিয়ে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি আফসার। তাকে ফিফটিবঞ্চিত করেন তাইজুল। তার বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪১ রানের সংগ্রামী ইনিংস খেলেন তিনি। সেই রেশ না কাটতেই ফেরেন কায়েস আহমেদ। তাকে তুলে নিয়ে সফরকারীদের গুটিয়ে দেয়ার পথ দেখান সাকিব। পরক্ষণেই ইয়ামিন আহমেদজাইকে বিদায় করে দলকে সেই পথেই রাখেন তিনি।
তবে তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ান রশিদ খান। ব্যাটিংয়ে নেমেই টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলতে থাকেন তিনি। ব্যাটকে তলোয়ার বানিয়ে সাকিব-তাইজুল-মিরাজদের কচুকাটা করেন অধিনায়ক। তাতে আফগানদের রানের চাকা ঘুরে দ্রুত। বাড়তে থাকে দলীয় সংগ্রহ। শেষ পর্যন্ত ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে থামেন রশিদ। একই সঙ্গে থামে তার দল। বাংলাদেশের হয়ে তাইজুল শিকার করেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট দখলে নেন নাঈম ও সাকিব।
প্রথম দিন খেলা হয় ৯৬ ওভার, গড় রান ২.৮২। সব মিলিয়ে দিন শেষে এগিয়ে ছিল আফগানিস্তান। নেপথ্য নায়ক ছিলেন রহমত শাহ। আফগানদের টেস্ট ইতিহাসের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে রেকর্ডের পাতায় নাম লেখান তিনি। ১০ চার ও ২ ছক্কায় ১০২ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলে রূপকথার গল্প লেখেন ইনফর্ম ব্যাটার। এছাড়া টপঅর্ডারের তেমন কেউ কিছু করতে পারেননি।