খবর৭১ঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শুধু রোহিঙ্গা সমস্যা নয়। সামনে আরও বিপদ আসছে। চোখ বন্ধ করে থাকলে হবে না।
তিনি বলেন, ওই যে উট পাখি কী করে? যখন মরুভূমিতে ঝড় আসে তখন মাথাটা বালুর মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে ভাবে যে সব থেমে গেল। কিন্তু তাতে মরুভূমির ঝড় বন্ধ হয় না। আজকে সরকার মাথা নিচু করে বসে আছে। কিন্তু এতে রক্ষা হবে না। কারণ চতুর্দিক থেকে বিপদ আসছে।
বুধবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১২তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে সভার আয়োজন করে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম।
ভারতের আসামের নাগরিকপুঞ্জির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আসামে যে এনআরসি তৈরি হয়েছে আমরা জানি না এটার মধ্যে কী আছে না আছে। আমরা এটুকু বুঝি যে, একটা বিপদ জানান দিচ্ছে। অবশ্যই বাংলাদেশের মানুষকে সজাগ হতে হবে। বাংলাদেশের মানুষকেই তার স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে, তার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষ ভোট দিতে পারেনি। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। মানুষ ন্যায় বিচার পায় না, সামাজিক বিচার পায় না। তারা অসহায় হয়ে গেছে। রোহিঙ্গারা এসেছে এ দেশে, সেই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি সরকার। কারণ তাদের যে প্রধান মিত্র ভারত ও চীন তারা মিয়ানমারের পক্ষে।’
নেতাকর্মীদের হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘৯ বছর আমরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি তারপরে বিজয় এসেছে। আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয় এনেছি। সুতরাং হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেউ হতাশ হবেন না। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের তরুণরা, যুবকরা কেউ হতাশ নন। তারা সংগ্রাম ও লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে তারা দেশনেত্রীকে মুক্ত করবেন। গণতন্ত্রকে মুক্ত করবেন এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবেন।’
সরকারের উদ্দেশে তিন দফা দাবি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান থেকে শুরু করে ২৬ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নির্বাচনের (একাদশ সংসদ নির্বাচন) ফলাফল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন দিতে হবে। একটা স্বাধীন ও যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘২০০১ সালে যখন আমাদের জোট নির্বাচিত হয়ে আসল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। তখন আজকের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, তিনি (শেখ হাসিনা) গ্যাস রফতানির চুক্তিতে সই করেননি বলে পরাজিত হয়েছেন। ইফ ইউ রিমেম্বার। গতকাল (মঙ্গলবার) কিন্তু সেই গ্যাস রফতানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়ার বিষয়টা নিশ্চিত করা যায় তাহলেই সব হয়ে যাবে। আজ তাই হচ্ছে।’
সংগঠনের সভাপতি আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, কেন্দ্রীয় নেতা আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, মীর হেলাল, ফরহাদ হোসেন ফরহাদ প্রমুখ।