রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান বিএনপির

0
642
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান বিএনপির

খবর৭১ঃ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি বলেছে, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি জাতীয় সংকটে রূপ নিয়েছে। গত দুই বছরে সরকার একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে পারেনি। রোহিঙ্গা আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে নতুন শিশু। এদের নাগরিকত্ব পরিচয় কী হবে? কোন দেশের পরিচয়ে এরা বেড়ে উঠবে? এখনও সময় আছে অবিলম্বে সর্বদলীয় বৈঠক করার। অবিলম্বে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন।

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। ১৯৯১ সালের পর বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে কূটনৈতিক সফলতায় দেখিয়েছিলেন। সফলভাবে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলা করার অভিজ্ঞতা তার রয়েছে। আজ মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গতরাতে লন্ডনে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের মাধ্যমে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার যে প্রস্তাব রেখেছেন, তা বাস্তবায়নের জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এই প্রস্তাব রোহিঙ্গা নিয়ে দেশ ও জাতি মহাসংকট থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারবে ইনশাআল্লাহ। রিজভী বলেন, ভারতের আসামে ১৯ লাখের বেশি মানুষকে নাগরিকত্বহীন করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে- তাদের ঠেলে দেওয়া হবে বাংলাদেশে। এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য আরও একটি বড় বিপদের আশঙ্কা। ফলে দলীয় স্বার্থ নয়, দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি বাংলাদেশিকে এক কাতারে আসা এখন সময়ের দাবি। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সর্বাগ্রে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন।

রিজভী বলেন, আমরা বারবার বলেছিলাম, এখনো বলছি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেবও বলেছেন,রোহিঙ্গা সংকট কেবলি দ্বিপাকি ইস্যু বিবেচনা করলে এই সংকট সমাধান হবে না। এটি একপাকি কিংবা দ্বিপাকি নয় এটি আন্তর্জাতিক ইস্যু। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করতে হলে আমাদেরকে জাতীয়ভাবে পলিসি নির্ধারণ করতে হবে। আর এই পলিসি নির্ধারণের জন্য, প্রয়োজন সর্বদলীয় বৈঠক।

ওই বৈঠকে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ছাড়াও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি, বুদ্ধিজীবী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি, দেশে-বিদেশে উচ্চপর্যায়ে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকদের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। তা হলে এ বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত সারাবিশ্ব গুরুত্বসহকারে দেখবে। মিয়ানমারও গুরুত্ব দিতে বাধ্য হবে। রিজভী বলেন, সরকার ব্যর্থতা ঢাকতে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে দুর্বোধ্য ধাঁধার মধ্যে ফেলে রেখেছে জনগণকে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাড়তি ও থিতানো বিবৃতি ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় কিছুই করতে পারেননি।

রুহুল কবির রিজভী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা দেখেছেন সোমবার রাজধানীতে বিএনপির শোভাযাত্রায় মানুষের উর্মিমুখর স্রোত নেমেছিল। ঘরবাড়ি ছেড়ে ব্যথিত, বঞ্চিত ও অপমানিত জনগণ বিএনপির কর্মসূচিতে সংহতি জানাতে নেমে এসেছিল রাজপথে। মানুষের জোয়ারে ঢাকা শহর প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। লাখ লাখ মানুষ রাজপথ কাঁপানো স্লোগানে স্লোগানে সরকারের প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত অনাস্থা জানিয়েছে। তাই কালবিলম্ব না করে খালেদা জিয়াকে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি দিন। এই অনির্বাচিত নিশিরাতের নির্বাচনের সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপে সরকারের অধীনে নির্বাচন ঘোষণা করুন। তা না হলে রাজপথে এই জনবিস্ফোরণ রোধ করতে পারবেন না। তখন পালানোর গলিপথও খুঁজে পাবেন না।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আইন-শৃঙ্খলা-বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালি ও সমাবেশে বাধা দিয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় হামলা করে পণ্ড করে দিয়েছে। মামলা দিয়েছে. গ্রেফতার ও নির্যাতন করেছে আমাদের নেতাকর্মীদেরকে। আমরা নিশিরাতের অনির্বাচিত সরকারের এই জুলুমের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here