খবর৭১ঃ
এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা একটি বিল অধ্যুষিত এলাকা। বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকার বিভিন্ন খাল-বিল ও জলাশয় পানিতে তলিয়ে যায়। এ পানিতে প্রাকৃতিক ভাবেই জন্ম নেয় শাপলা ফুল। বর্ষা মৌসুমে খাল-বিল ও জলাশয় থেকে শাপলা সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন কাশিয়ানী উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। বর্ষা মৌসুমে কৃষকের তেমন কোন কাজ না থাকায় এলাকার অনেক কৃষক, বেকার ও অন্যান্য পেশার লোক বর্তমানে এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ এই শাপলা একদিকে যেমন সবজির চাহিদা মেটাচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে বর্ষকালে কাজ না থাকা বেকার মানুষ শ্রমজীবিদের আয়ের পথ তৈরী করে দিচ্ছে। উপজেলার সিংগা, রাহুথড়, হাতিয়াড়া, শিল্টাসহ বিভিন্ন বিলে খুব ভোরে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষেরা নৌকা নিয়ে ঘুরে ঘুরে শাপলা সংগ্রহ করে। কোন পুঁজির প্রয়োজন হয় না বলে এ পেশা বেশ লাভজনক।
শাপলা ফুল সাধারণত বর্ষায় ডুবে যাওয়া বোরো ধানক্ষেত, পাটক্ষেত ও আমন ধান ক্ষেতে বেশি জন্মায়। শাপলা শুধু জাতীয় ফুলই নয়, নানা অঞ্চলের মানুষের কাছে সবজি হিসেবেও বেশ জনপ্রিয় শাপলা। শাপলা বিক্রিকে কেন্দ্র করে উপজেলার রাহুথড়ে পাইকারী বাজার গড়ে উঠেছে। ভোরের আলো ফুটতেই এ বাজারে আশপাশের গ্রামসহ প্রত্যন্ত এলাকা থেকে শাপলা সংগ্রহকারীরা জড়ো হন।
ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে মুখরিত হয় এ বাজার। শাপলা ফুলের সাদা আভায় আচ্ছাদিত হয়ে যায় সড়কে বসা পুরো বাজার। পাইকাররা এসব শাপলা কিনে জেলা সদরসহ পাশর্বর্তী যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল ও লোহাগড়ায় বিক্রি করে থাকেন। রাহুথড় শাপলার পাইকারি আড়তের ইজারাদার সংকর কুমার বসু বলেন, প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষেরা শাপলা সংগ্রহ করে নৌকায় করে পাইকারী বিক্রির জন্য এখানে নিয়ে আসে। পাইকারীররা এসব শাপলা কিনে ভ্যান, ইজিবাইক ও নছিমন করে কাশিয়ানী সদরসহ যশোর, খুলনা, আলফাডাঙ্গা ও ভাটিয়াপাড়া নিয়ে বিক্রি করে। প্রতিদিন প্রায় ২০/৩০ গাড়ী শাপলা এখান থেকে বিভিন্ন জেলায় যায়।
শাপলা সংগ্রহকারী গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, আমি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বর্ষাকালে শাপলা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। প্রতিদিন প্রায় ৫/৭ শ’ টাকার শাপলা সংগ্রহ করতে পারি। ভোরে রাহুথড় বাজারে পাইকারী বিক্রি করে দেই।