ফের বাড়তে পারে বাস ভাড়া!

0
587
ফের বাড়তে পারে বাস ভাড়া!
ছবিঃ সংগৃহীত

খবর৭১ঃ

ফের বাসের ভাড়া বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। তেল-গ্যাসের মূল্য না বাড়লেও সংগঠনটির ভাড়া বাড়ানোর চেষ্টাকে অযৌক্তিক বলছেন যাত্রীরা।

যাত্রীরা বলছেন, এমনিতেই পৃথিবীর যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে গণপরিবহনের ভাড়া বেশি, কিন্তু সেবা কম। তাই ফের বাসের ভাড়া বাড়ানোর দাবি অযৌক্তিক। মানুষের আয় না বাড়লেও গণপরিবহনের ভাড়া বাড়লে জীবনযাত্রায় বিরুপ প্রভাব ফেলবে।

তবে ভাড়া বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে পরিবহন মালিক সমিতি বলছে, গত কয়েক বছরে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লেও বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়নি। ফলে সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ভাড়া বাড়ানো ন্যায্য অধিকার।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কর্মকর্তারা জানান, প্রথমে বাজার পর্যালোচনা করা হবে। বাজার দেখে যদি মনে হয় গণপরিবহনের ভাড়া পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজন আছে, তাহলে তারা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবে।

সূত্র জানিয়েছে, কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) ও ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণের আবেদন জানিয়ে গত ৬ জুলাই বিআরটিএ চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি পাঠায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে সিএনজির দাম প্রতি ঘনমিটারে ৩৮ টাকা থেকে ৫ টাকা বাড়িয়ে ৪৩ টাকা করার কারণে যানবাহনের পরিচালনা ব্যয় সাড়ে ৭ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়াও বিগত অর্থবছরগুলোর বাজেটে গাড়ির টায়ার-টিউব, খুচরা যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক বহুগুণ বেড়েছে। এতে গাড়ির পরিচালনা ব্যয়ও বাড়ছে। তাই বাসের ভাড়া বাড়ানো না হলে পরিবহন মালিকরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন।

যানবাহনের অতিরিক্ত ব্যয়ের বিষয়টি বিবেচনা করে ঢাকাসহ সারাদেশের সিএনজি ও ডিজেলচালিত বাস-মিনিবাসের ভাড়া বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।

তথ্য মতে, ২০১১ সালের ৩১ ডিসেম্বর দূরপাল্লার বাসের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১৫ পয়সা বাড়িয়ে ১ টাকা ৩৫ পয়সা করা হয়েছিল। দুই বছর পর ২০১৩ সালে দূরপাল্লার বাসের ভাড়া আবার ১০ পয়সা করে বাড়ানো হয়। ফলে ভাড়া দাঁড়িয়েছিল ১ টাকা ৪৫ পয়সা।

পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে চলাচলকারী বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়। সে সময় বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সা ও মিনিবাসের ভাড়া ১ টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। বাসের ৭ টাকা ও মিনিবাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ নির্ধারণ করা হয়।

কিন্তু ডিজেলের দাম কমার পরেও ২০১৬ সালে বাসের ভাড়া কমাতে অস্বীকৃতি জানায় বাস মালিকরা। তবে নানা মহলের সমালোচনার মুখে ওই বছরের ৩ মে দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটের ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে নামমাত্র ৩ পয়সা কমানো হয়। ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হয় ১ টাকা ৪২ পয়সা।

ফলে দেখা গেছে, যেসব দূরত্বে ভাড়া ৪৭০ টাকা ছিলো, কমানো হয় মাত্র ১০ টাকা। কিন্তু সেটা ঘোষণা দিলেও কার্যকর করা হয়নি। ঢাকা-সিলেট রুটে পূর্বের ভাড়া ৪৭০ টাকাই আদায় করা হয়। এভাবেই অন্য রুটেও কমানো হয়নি ভাড়া।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, প্রতি বছরই গ্যাস, গাড়ির টায়ার-টিউবসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম অনেক বাড়ছে। কিন্তু ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে না।

তিনি বলেন, প্রতি বছর দামের সঙ্গে মিলিয়ে ভাড়া সমন্বয় করার কথা ছিলো, কিন্তু সমন্বয় করা হয়নি। বাস ভাড়া নিয়ে কোনো আলোচনাও হয়নি। তাই সমন্বয় করে ভাড়া বাড়ানো হোক।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বলেন, গত ২৬ অগাস্ট আমরা বাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। বৈঠকে বাজার যাচাই করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

‘মিটিংয়ে আমরা তাদের বলেছি, বাজারে একটা টিম পাঠাতে। আমরাও একটা টিম পাঠাবো বাজারে। যাচাইয়ের পর মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here