খবর৭১ঃ গণমাধ্যম ও জনগণের স্বার্থেই সম্প্রচারে ডিজিটালাইজেশন প্রয়োজন’- বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসি’র সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তথ্যসচিব আবদুল মালেক ও অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রচার) নূরুল করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিজেসি’র আহ্বায়ক রেজওয়ান হক সংগঠনের পক্ষে সূচনা বক্তব্য দেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রচার যদি ডিজিটালাইজড হয়, তাহলে সম্প্রচার খাতে পুরোপুরিভাবে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে। এর ফলে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের, গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের এবং জনগণের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গণমাধ্যমের সঙ্গে কাজ করছে, ভবিষ্যতেও আমরা এক সঙ্গে কাজ করবো।’
গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ার বিষয়ে ড. হাছান বলেন, ‘এ আইন চূড়ান্ত করতে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক প্রয়োজন। কারণ শ্রম আইনের সঙ্গে এর সমন্বয় আবশ্যক। সেটা সহসাই হবে, তারপর মন্ত্রিসভা হয়ে সংসদে যাবে। আমরা চেষ্টা করবো সহসাই সব প্রক্রিয়া সমাধার জন্য।’ বাস্তবতার নিরিখে মন্ত্রী বলেন, ‘আইন তৈরি করা সহজ কাজ নয়। আর গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট আইন করা আরও সহজ নয়, বরং আরো কঠিন। স্পর্শকাতর এ আইনের সঙ্গে একাধিক মন্ত্রণালয় যুক্ত বলে বিবেচনা করে দেখেশুনে তা প্রণয়নে কিছু সময় প্রয়োজন।’
সম্প্রচার কমিশন ও গণমাধ্যমকর্মী আইন প্রণীত হলে গণমাধ্যমের অনেক সমস্যা সমাধান হবে, উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার সম্প্রচার নীতিমালা করেছে, সম্প্রচার আইনও আমরা খুব সহসাই পার্লামেন্টে নিয়ে যেতে পারবো বলে আশা করি। সম্প্রচার আইন হলে সম্প্রচার কমিশন হবে। সম্প্রচার কমিশন ও গণমাধ্যমকর্মী আইন প্রণীত হলে গণমাধ্যমের অনেক সমস্যা সমাধান হবে।’
ড. হাছান বলেন, ‘গণমাধ্যমের জন্য আন্তরিক প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবার পর তার হাত ধরেই প্রাইভেট টেলিভিশন এসেছে এবং এর বিকাশ ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী তখনই প্রাইভেট টেলিভিশনের লাইসেন্স দেয়া শুরু করেন। এই মাধ্যমের বিকাশ পুরোটাই জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে হয়েছে। সুতরাং এই মাধ্যমের সাথে যারা যুক্ত তাদের সমস্ত কল্যাণ করার জন্য সরকার সবসময় আপনাদের সাথে আছে এবং থাকবে।’
আমরা এই মাধ্যমে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন ইতোমধ্যে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে অনেক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আগে বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোকে সিরিয়াল অনুযায়ী দেখানো হতো না এবং সিরিয়াল পাওয়ার জন্য ক্যাবল অপারেটরদের কাছে ধর্ণা দিতে হতো। সেটির অবসান হয়েছে। এটকোর দেওয়া তালিকা অনুযায়ী সেই সিরিয়াল সারা দেশে মানা হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যত্যয় হলে সেখানে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
‘আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে আমরা মোবাইল কোর্ট আমরা পরিচালনা করেছি, মোবাইল কোর্ট ভবিষ্যতেও পরিচালনা করা হবে এবং মোবাইল কোর্ট ঘোষণা দিয়ে পরিচালনা করবো না, যখন প্রয়োজন পড়বে, তখন পরিচালনা করবো; যারা আইন অমান্য করবে, দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিকৃত করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনের প্রয়োগ হবে’ উল্লেখ করে ‘সম্প্রচারের ক্ষেত্রে খুব সহসাই টাস্কফোর্স গঠন করা হবে’ বলে জানান ড. হাছান মাহমুদ।
সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিভিন্ন সময় বেতন ভাতা না পাওয়ার অসুবিধা, টেলিভিশনগুলোর আয় কমে যাওয়া এগুলো দূর করার অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে আইনানুসারে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন বন্ধ করা হয়েছে। এত বাংলাদেশের যেসব বিজ্ঞাপন বিদেশে চলে যাচ্ছিল, তা ফিরে আসছে। দু’একটি কোম্পানি বিদেশি চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন সম্প্রচার করছে, তবে সে কোম্পানিগুলো সেই দেশে রেজিস্ট্রার্ড। তারপরও আমাদের দেশে যাতে বিদেশি চ্যানেলগুলোর পুরোপুরি ক্লিনফিড দেখানো হয়, সেজন্য তাদেরকে আমরা চিঠি দিয়েছি এবং ব্যাখ্যা চেয়েছি।’
তথ্যমন্ত্রী এ সময় সদস্যদের কল্যাণে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের বেশকিছু পদক্ষেপের প্রশংসা করেন এবং বলেন, ‘সম্প্রচার গণমাধ্যমের একটি বড় শাখা। এখানে শতশত নয় কয়েক হাজার গণমাধ্যমকর্মী কাজ করে। সুতরাং একটি সমিতি থাকা বাঞ্ছনীয় ছিল।’